চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সারাদেশের সহায়, সম্বলহীন ৫০ লাখ পরিবারকে সরকার দশ টাকা কেজি দামে চাল বিক্রির মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ কর্মসূচি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হয়েছে।

‘তবে কিছু ডিলার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিকে বিতর্কিত করতে অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সারাদেশের ৬২ জনের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। এতে কিছু সরকার দলীয় লোকও আছে। ’

বুধবার সকালে সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ বাস্তবায়নে জনসচেতনতা শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ কর্মসূচিকে কোনভাবে ব্যাঘাত করতে দেওয়া হবে না। তাই অনিয়ম দুর্নীতিতে যারাই জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কেননা পরিকল্পিতভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। আগে বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে খাদ্য রফতানি করা হচ্ছে। প্রায় ২ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য বিদেশে রফতানি করা হয়। রফতানি করা হচ্ছে চাল। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ফলশ্রুতিতে কৃষকরা ভাল ফসল উৎপাদন করছে। উৎপাদিত হচ্ছে নানান খাদ্যসামগ্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আগে বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে খাদ্য বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হচ্ছে। এ খাদ্য উৎপাদন থেকে খাবার টেবিল পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যে প্রশাসনের তদারকিতে খাদ্যে ভেজাল কমে গেছে। আমে ফরমালিন নেই। শুধু বিক্রেতাকে ধরলে তো হবে না। যেখান আমের ফলন হয়, সেখানে প্রশাসনের তদারকি বাড়িয়ে আমরা আম ফরমালিন মুক্ত করেছি। কারণ গোড়া থেকে যদি ভেজাল দূর করা যায়, তাহলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত সম্ভব। এছাড়াও খাদ্য বাজারজাত করার উপাদান সঠিক কিনা, তাও তদারকিতে রয়েছে প্রশাসন।

মন্ত্রী বলেন, জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। ভেজালের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় শ্রীলংকা, ভারত, ইংল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশের আলোকে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। এখন এ আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্ব সকলের। জনসচেতনতা বাড়াতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় কর্মশালা করা হয়েছে। বর্তমানে জেলা পর্যায়ে এ কর্মশালা করা হচ্ছে, পরবর্তীতে উপজেলা পর্যায়েও এ কর্মসূচি করা হবে। জনসচেতনতার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপদ করা সম্ভব।

বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. আবদুল ওয়াদুদ দারা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, নিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজুল হক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন।

এর আগে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ বাস্তবায়নে জনসচেতনতার লক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ০৯, ২০১৬)