আরিফ মাহবুব


শুধু মুখে নয় কাজেও এর প্রতিফলন চাই। সাম্প্রদায়িকতার উন্মাদনা থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে আওয়ামী লীগারদের বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে ফিরিয়ে আনতে হবে। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দলকে জঙ্গল ও জঞ্জাল মুক্ত করতে হবে।

মানুষের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনতে নিজের দলের দোষ ত্রুটিগুলো অন্যের ঘাড়ে না চাপিয়ে দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সামাল দিয়ে মানবতাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা প্রয়োজন। একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রকে অসাম্প্রদায়িক উন্মাদনার হাত থেকে রক্ষা করতে সংবিধানকে সম্পূর্ণরূপে সংশোধন করে রাষ্ট্র ধর্মকে সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে সুস্থ মানসিকতার রাজনীতিতে মনোনিবেশ করার বিকল্প নেই।

এদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান তথা সকল সম্প্রদায়ের মানুষদের সমান অধিকারে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। মনে রাখতে হবে অসুস্থ রাজনীতিবীদদের কারণেই অসুস্থ সমাজ ব্যবস্থার তৈরি হয়, যেখানে প্রশাসন সেই অসুস্থ রাজনীতিবীদদের কারণেই হয়ে পড়ে দুর্নীতিগ্রস্থ যার প্রমাণ আর এই সাম্প্রদায়িক উন্মাদনায় দেখতে পেরেছি। অসুস্থ রাজনীতিবীদদের কারণেই সমাজ থেকে মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে, ২ বছরের শিশুও নরপশুদের হাতে ধর্ষিত হয়।

পরিকল্পিতভাবে ফরিদপুর ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দুদের জায়গাজমি লুটপাট করার প্রবনতাকে রুখে দিতে না পারলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ভিডিওর ফ্রেমেই আবদ্ধ থেকে যাবে। আর কিছুদিন পর হয়তো ইতিহাসের পাতায় লিখতে হবে এই বাংলাদেশে একদিন হিন্দুদের বসবাস ছিল।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতারা যখন বাসে ঝুলে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা যাচাই বাছাই করেন, রেলের সরকারী কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে অফিসের ভেতর চড় থাপ্পড় দিয়ে বসেন কিংবা আইন ভঙ্গকারী সিএনজী ড্রাইভারকে রাস্তায় কান ধরে উঠবস করান তখন বাংলার জনগণ আমরা হাত তালি দিয়ে ঐ নেতাকে বাহবা দেই ভুলেও চিন্তা করার সুযোগ পাই না যে এটা একটা ক্ষমতার অপব্যবহার মূলক কর্ম। আমাদের হেন মানসিকতা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে এই মুহূর্তে মাঠে না নামলে ২০১৯ পর্যন্ত ভোটের মাঠে অসহনীয় বিড়ম্বনার মুখামুখি হতে হবে। সব অপকর্মকে অন্যের ঘাড়ে চাপাবার প্রবণতাকে বর্জন করে নিজের ঘরের সোনার সন্তানদের সামাল দিতে হবে তা না হলে সূর্য সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা তাদের মার খেয়ে হাত পা ভেঙ্গে হাসপাতালে মৃত্যুর প্রহর গুনবেন।

আজ আবর্জনার স্তূপে পড়ে থাকে অর্ধগলিত লাশ। লেখক, প্রকাশক, শিক্ষক, কবি, ছাত্র, ব্লগার, মুক্তমনা, ইমাম, পাদ্রী, ধর্মযাজকদের লাশ চাপাতির আঘাতে ফুটপাতের উপর গড়াগড়ি যাচ্ছে। ৫৭ ধারার অপব্যবহারে লাঞ্ছিত হয় দেশের সুনামধন্য সাংবাদিক আবার সেই ৫৭ ধারাতেই মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে সাম্প্রদায়িক উস্কানী দাতারা।

লেখক : সুইডেন প্রবাসী