স্টাফ রিপোর্টার : দেশের চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে তরুণ নেতৃত্বের প্রয়োজন। কেননা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দেওয়া, জনসেবা ও কার্যকর নাগরিকত্বের মূল্যবোধ জাগাতে পারে তারাই।

শুক্রবার ইয়ুথ লিডারশীপ সামিট সম্মেলনের শেষ দিনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভার প্যানেল আলোচকরা এসব কথা বলেন।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এ সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি।

এসময় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহী বি চৌধুরী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম।

শাহরিয়ার আলম বলেন, রাজনীতিতে পরিবর্তন আনা অনেক কঠিন। অবিবাহিতদের দিয়ে ছাত্র রাজনীতি করার কথা ছিল। তা হচ্ছে না। দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের বয়স নির্ধারণের প্রয়োজন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালগুলোতে ছাত্র রাজনীতি চালু থাকলেও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তা বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গীবাদ কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করেছিল শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন সেটা বন্ধ করে দিয়েছে।

মাহী বি চৌধুরী বলেন, পেশী শক্তির রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় আসে বারবার। রাজনীতিতে পেশী শক্তি ব্যবহার করলে মেধা শক্তি কাজে আসে না। দেশ আজ বিপর্যস্থ। ক্ষমতার চাবিকাঠি সন্ত্রাসীদের হাতে। রাজনীতি প্রবাহমান নদীর মত। রাজনীতির স্রোতে ভালো মানুষ না গেলে খালি পড়ে থাকবে না। খারাপ মানুষেরা গিয়ে জায়গা দখল করবে। ছাত্র বিবাহিত হলে রাজনীতি করতে পারবেন না। এটা ঠিক না। সে যদি পড়ালেখা করে তাহলে বিবাহিত অবিবাহিত দেখার প্রয়োজন মনে করি না। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তনে প্রয়োজন তরুণ নেতৃত্ব।

নাসির উদ্দিন অসীম বলেন, মূল ধারার রাজনীতি করতে গিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিলে বেশী দূর এগুনো যায় না। দুই তিন বছর পরেই তারা ঝড়ে যায়। বাংলাদেশের রাজনীতির এ ধরণের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে দেশের জন্য কাজ করার মনোভাব না থাকলে কখনোই শান্তি শৃংখলা ফিরে আসবে না।

এ সময় শিক্ষার্থীরা রাজনীতির ধরণ, সংস্কৃতি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মানষিক অবস্থা, জনগণের সঙ্গে মিলেমিশে তাদের মনোভাব বোঝাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন।

দেশের সার্বিক উন্নয়নে সততা, লক্ষ্য নির্ধারণ, সমঝোতা এবং সুযোগকে কাজে লাগানোর ক্ষমতার মাধ্যমে সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার জন্য সংস্কারমূলক ও পরিবর্তনমূলক কাজ করাই হলো জননেতৃত্ব। এ ধরণের নেতৃত্ব শক্তিশালী ও কার্যকর করার জন্যই বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশীপ সেন্টার আয়োজন করে এই সম্মেলনের।

এতে পাঁচটি মহাদেশের ৫শ জনবক্তা অংশ নেন। বক্তব্য দেন হার্ভার্ড, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় লিডারশীপ অ্যাসোসিয়েটের বিশেষজ্ঞসহ ৫০ জন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বক্তা। ইউএনডিপি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ইজাজ আহমেদ বলেন, বর্তমান ও কাঙ্খিত বাংলাদেশের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করতে নেতৃত্ব দিবে তরুণ সমাজ। তাই তরুণ প্রতিশ্রুতি ও সম্ভাবনা প্রচার করা এবং তাদের মধ্যে কার্যকর জনসেবা নাগরিকত্বের মূল্যবোধ জাগাতে পারে এটাই প্রত্যাশা।


(ওএস/এটিআর/জুন ১৩, ২০১৪)