মাহবুব আরিফ

মানুষের প্রতি একজন নেতার ভালোবাসা প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নাই |
বাংলাদেশে একজন বঙ্গবন্ধুর প্রয়োজন কোন কালেই ফুরিয়ে যাবে না, যিনি যে কোন সময় দুস্থ মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতেন, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় বঙ্গবন্ধু কোনদিনই সাধারণ মানুষদের দুরে ঠেলে দিতেন না ।

আজ তিনি বেঁচে থাকলে সশরীরেই সাঁওতাল পল্লীতে হাজির হতেন, তাদের ঘরে বসেই দুপুরের খাবারটা ঠিক খেয়ে নিতেন, তাদের দুঃখকে নিরসন করতে মুহূর্তকাল বিলম্ব করতেন না |

আমি সাদা কালো মনের নেতা বঙ্গবন্ধুকে কারো সাথে তুলনা করতে চাই না, তবে সাঁওতালদের অন্তরে বঙ্গবন্ধু হয়তো এখনও পাশে আছেন | শুধু একবার কল্পনা করুন তিনি বেঁচে থাকলে আজ সাঁওতালদের এই দুর্যোগের দিনে তিনি কি ঘরে বসে থাকতেন, খোলা আকাশের নীচে বসবাসরত এই মানুষগুলো অন্তত তার কাছে আশ্রয় পেতেন | সাদা কালো আওয়ামীলীগ দলটি আজ অনেকাংশেই রঙ্গিন হয়ে গেছে, ধান্দা ফিকির্বাজ্দের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো |

একজন ভালোবাসার মানুষ কাছে থাকার প্রয়োজনীয়তা হয়তো আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা একদিন মানবতার দৃষ্টি নিয়ে অনুধাবন করতে পারবেন, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির লোভে দলীয় আন্ত কলহ আজ রাজনীতিবিদ দের অন্ধ করে দিচ্ছে |

সাঁওতালদেরও একটা আবদার থাকতে পারে,. তাদেরও একজন ভালোবাসার আশ্রয় প্রয়োজন, তিন সাঁওতাল হত্যার ঘটনায় এখনও কোনও মামলা হয়নি, আত্মসম্মানবোধ বলতে সাঁওতালদেরও কিছু একটা থাকতে পারে, এতদিনের জমানো কষ্ট কি শুধু ত্রাণের সাহায্যেই নিরসন হবে | আজ সাপমারা ইউনিয়নের মাদারপুর ও জয়পুর পল্লীর ৩০০ শত সাঁওতাল পরিবার খোলা আকাশের নীচে দিন কাটিয়েছে | সামান্য একটু ভালোবাসার কাঙ্গাল ছিল এই ৩০০ শত পরিবার, স্বাধীন একটি দেশে তাদেরও তো স্বপ্ন থাকতে পারে, তারাও ভেবেছিলো স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আজ তাদের শক্তি, তাদের মনেও আশা ছিল সরকার ন্যায় বিচারে তাদের সহযোগিতা করবে |

সব দুঃখ কষ্ট যে ত্রাণের সাহায্যেই লাঘব হয়না তা সাঁওতালরা বুঝিয়ে দিয়েছে | গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য দেওয়া সরকারি ত্রাণ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মাদারপুর ও জয়পুর পল্লীর সাঁওতালরা |
গরীবদের আত্মসম্মানবোধ ত্রান দিয়ে কেনা যায় না চাই ভালোবাসা | ইহাকেই বলে আত্মসম্মানবোধ ও ত্রানের মুখে চপটাঘাত |

মাহবুব আরিফ : সুইডেন প্রবাসী