লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের বড়দিয়া ফজিলাতুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক রঞ্জিত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার  অভিযোগে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার বড়দিয়া বাজার এলাকায় নাগরিক সমাজের ব্যানারে পোষ্টারিং করা হয়েছে।  

অভিযোগে জানা গেছে, ফজিলাতুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রঞ্জিত বিশ্বাস নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বেশ কিছুদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। গত শনিবার ওই ছাত্রীকে বাসায় প্রাইভেট পড়া শেষে অন্য ছাত্রীদের বিদায় দিয়ে তাকে কুপ্রস্তাব দেয় এবং ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখে।বিষয়টি ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে তার অভিভাবককে জানায়। এ বিষয়ে ওই ছাত্রীর মা বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির নিকট অভিযোগ দেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও কালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান খান শামীমুর রহমান অভিযুক্ত শিক্ষক রঞ্জিত বিশ্বাসকে এবং ওই বিদ্যালয়ে অন্য সব শিক্ষকদের ও পার্শ্ববত্তি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বাসায় ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীর কাছে সব শুনামেলা শেষে সাদা কাগজে রঞ্জিতের সহি নিয়ে ছেড়ে দেয়। এ বিষয়টি ব্যাপকভাবে জানাজানি হয়ে পড়লে এলাকাবাসী ও অবিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের র্সষ্টি হয়। এদিকে লম্পট শিক্ষকের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) বড়দিয়া বাজার এলাকায় নাগরিক সমাজের ব্যানারে পোষ্টারিং করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর মা ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক রঞ্জিত আমার মেয়েকে বলে তোমার প্রাইভেটের টাকা দেয়া লাগবে না, স্কুলের বেতন এবং তোমার সাজ-সজ্জার সবকিছু আমি দেবো এমনকি পরীক্ষায় এ+ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দেয়। মেয়ের কাছে ঘটনা শুনে আমি বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। সভাপতি ন্যায্য বিচার দিতে চেয়েছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খান ফিরোজ আহম্মদ এ বিষয়ে বলেন,অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নিকট ফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দিয়ে বন্ধ করে রাখেন।

কালিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মামুন উদ্দিন আল আজাদ বলেন, ঘটনা শুনে আমি ছাত্রীর মা ও প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করেছি। মঙ্গলবার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তকরাসহ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছেএবং আগামি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে। ওই শিক্ষক আগেও একবার ব্র্যাক এ কর্মরত একব্যাক্তির মেয়ে(ছাত্রী)কে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল। ওই ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।

কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি। আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারতাম কিন্তু অভিযোগ দিয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেবের নিকট। তিনি যা ভাল বোঝেন। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আগেও শুনেছি। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান শামীম রহমান অসি ফোনে বলেন,বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্যকে প্রধান করে এবং দুজন শিক্ষককে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আগামি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(আরএম/এএস/নভেম্বর ১৬, ২০১৬)