মাদারীপুর প্রতিনিধি :ফেসবুকের চার বন্ধুর সহযোগিতায় ৩ শিশু পেলো নতুন জামা। শুক্রবার নতুন জামাগুলো তিন শিশুর হাতে তুলে দেয়া হয়।

মাদারীপুর শহরের বাদামতলা এলাকার মো. মাসুদ রানার ছেলে ইউআই সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আব্দুর রহমান ভালো গজল পায়। তাই গজল শেখার জন্য সে ভর্তি হয় একটি ইসলামি সাংস্কৃতিক সংগঠনে। সে সংগঠনের নিজস্ব একটি ড্রেস আছে। কিন্তু টাকার অভাবে সে ড্রেস কিনতে পারছিলো। তাই গজল শিখতে গিয়ে তাকে পড়তে হয় নানা সমস্যায়। সেই সাথে তার ভালো কোন ড্রেস না থাকায় অনুষ্ঠানগুলোতে সে অংশগ্রহণ করতে পারছিলো না।
অপরদিকে দুধখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ দুধখালী গ্রামের নওমুসলিম আ. রহিম খানের দুই ছেলে তরিকুল ইসলাম খান ও বিল্লাল হোসেন খান। তারা স্থানীয় নুরানী মাদ্রাসায় পড়ে। তাদেরও ড্রেস ও ভালো জামা না থাকায় সমস্যা পড়তে হয়।

পরে সাংবাদিক আয়শা আকাশী তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে মাদারীপুরের মেয়ে লন্ডন প্রবাসী সামান্তা অরণি, মাদারীপুর চরমুগরিয়ার মেয়ে ঢাকায় বসবাসরত (নাম না প্রকাশের অনিচ্ছুক), মাদারীপুরের ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী এ.বি হালিম ও গোপালগঞ্জের মেয়ে ঢাকায় বসবাসরত নার্গিস সুলতানা এগিয়ে আসেন। তাদের পাঠানো ৪ হাজার টাকা দিয়ে এই ৩ শিশুকে নতুন জামা ও ড্রেস কিনে দেয়া হয়।

শুক্রবার টুম্পা ইলেক্ট্র কর্ণারে নকশি কাথার আয়োজনে জামা বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুরের সরকারী নাজিম উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইসলামি স্টাডিস বিভাগের প্রভাষক মো. আ. ছালাম মিয়া, ফ্রেন্ডস অভ নেচারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রাজন মাহমুদ, টিআইবি এর সহকারী ম্যানেজার মীর মাসুদ, মুন্সি সমিলের স্বত্বাধিকারী শাহালম হাওলাদার, মিজানুর রহমান প্রমুখ।

সংবাদ প্রকাশের পর মাদারীপুরের অসহায় লাকী বেগমের পাশে দাড়ালের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র


মাদারীপুরের অসহায় লাকী বেগমকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তার পাশে দাড়ালেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুরুল আলম। তিনি লাকী বেগমকে প্রতিমাসে এক হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা করবেন বলে মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি বিকাশের মাধ্যমে এক হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন।

১৫ নভেম্বর দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার মহিলা পাতায় ‘দুই সন্তানসহ আন্তঃসত্ত্বা লাকী এখন কি করবে! ১২ বছরে বিয়ে, ২৮ বছরে বিধবা’ শিরোনামে মাদারীপুরের লাকী বেগমের আত্মজীবনী প্রকাশ পায়। তা পড়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুরুল আলম এগিয়ে আসেন।

তিনি লাকী বেগমের সন্তানদের পড়াশুনার খরচের জন্য প্রতিমাসে এক হাজার টাকা দেয়ার আশ্বাস দেন।

ইতিমধ্যে সংবাদ প্রকাশের পর ঐদিন সন্ধ্যায় তিনি বিকাশের মাধ্যমে লাকী বেগমকে এক হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। প্রতিমাসের ১০ তারিখের মধ্যে এক হাজার টাকা লাকী বেগমকে বিকাশের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিবেন বলে মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেন।

এর আগে আয়শা আকাশীর ফেসবুকে লাকী বেগমকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেখে মাদারীপুর পেয়ারপুরের মিয়া বাড়ির ছেলে মাদারীপুর সমিতির সভাপতি ইতালী প্রবাসী ওয়াদুদ মিয়া ওরফে জনি মিয়া ১০ হাজার টাকা পাঠান।

সেই টাকা থেকে লাকী বেগমের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য একটি সেলাই মেশিন ও নগদ ৪ হাজার টাকা দেয়া হয়।

এই সহযোগিতাগুলো পেয়ে লাকী বেগম খুব খুশি। সে বলেন, প্রতিমাসে এই টাকা তার খুব উপকারে আসবে। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুরুল আলমের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেন। সেই সাথে ইতালী প্রবাসী জনি মিয়ার প্রতিও কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে লাকী বেগম বলেন, সেলাই মেশিন পেয়ে আমি আত্মসংস্থানের চেষ্টা করছি। আশা করছি আমার কষ্ট কিছুটা হলেও দুর হবে।






(এএসএ/এস/নভেম্বর ১৯, ২০১৬)