ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের নিরাপত্তার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলাকে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন। সোমবার দুপুরে তিনি এ তথ্য জানান।

ইকবাল হোসাইন বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনদের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ। ইতোমধ্যে আটটি সিসি ক্যামেরা স্থাপনও করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আরও ১৯টি ক্যামেরা স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি বলেন, নাসিরনগরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সব ধরণের উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ওঠান বৈঠক এবং সম্প্রীতি সমাবেশ করছি। নাসিরনগরের আগের সেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অনেকটাই ফিরে এসেছে। তবে যারা এখনো ভয়ে এলাকায় ফিরে আসেননি তাদের জন্য এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে যেন তারা ফিরে আসেন। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করবে না বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফ নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্র করে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) মামলায় গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ (৩০) দাসের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে নাসিরনগর উপজেলা। পরদিন (৩০ অক্টোবর) মাইকিং করে সমাবেশ ডাকে দুটি ইসলামী সংগঠন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই দুষ্কৃতিকারীরা নাসিরনগর উপজেলা সদরে তাণ্ডব চালায়।

এসময় দুষ্কৃতিকারীরা উপজেলার অন্তত ১০টি মন্দির ও শতাধিক ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এরপর ৪ নভেম্বর ভোরে ও ১৩ নভেম্বর ভোরে দুষ্কৃতিকারীরা আবারও উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়েরর অন্তত ৬টি ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় পৃথক সাতটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজ দেখে ৮৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ২১, ২০১৬)