কুমিল্লা প্রতিনিধি : দাউদকান্দির গৌরীপুর খিদমা ডিজিটাল হসপিটালের সকল সেবা কার্যক্রম প্রশাসন কর্তৃক বন্ধের নির্দেশ প্রদানের খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রমে অনিয়ম ও লাইসেন্স না থাকায় কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে এ নির্দেশনা জারী করা হয়। উক্ত চিঠিতে উল্লেখ্য করা হয়, ‘হাসপাতাল পরিচালনার বৈধ লাইসেন্স বা অনুমতি পত্র নেই। লাইসেন্স বা অনুমতি পত্র ব্যতিত হাসপাতাল চালু রাখা বেআইনি দন্ডযোগ্য অপরাধ। হাসপাতালের অডিটডোর ও ইনডোর স্বল্প পরিসরের, ও.টি রুম খুবই ছোট, ওয়াশরুম নেই এবং পোস্ট অপারেটিভ রুমটি মান সম্মত নহে। ডাক্তার ও নার্সদের বসার রুম নেই, তাদের ডিউটি রোস্টার, ও.টি রেজিস্টার ও রোগী ভর্তির রেজিস্টার নেই’।

চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রসূতি শাহিনা আক্তার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে অপারেশন করা পর্যন্ত কোন ডাক্তার কর্তৃক রোগীর ব্যবস্থাপত্র পাওয়া যায়নি, রোগীর ফলোআপ নেই এবং অস্ত্রোপচারের পূর্বে রোগীর কোন প্রকার পরীক্ষা বা চেকআপ এর কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।

সম্পূর্ণ অব্যবস্থানার মধ্যে হাসপাতালে উক্ত প্রসূতির অস্ত্রোপচার করা হয়। যা ছিল সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বেআইনী। হাসপাতালে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবলের অভাব রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসা সামগ্রী নিন্ম মানের ও প্যাথলজি (ল্যাবঃ) সার্ভিস মানসম্মত নয়। হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম মোটেই সন্তোষজনক নহে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সহিত প্রতারণা করছেন এবং সরকারি আইন ও নিয়মাবলী ভঙ্গ করছেন। এমতাবস্থায় খিদমা হাসপাতালের সকল সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন কুমিল্লা সির্ভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মজিবুর রহমান’।

এ ব্যাপারে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জালাল হোসেন বলেন, ‘সিভিল সার্জন কর্তৃক নির্দেশনা পেয়ে আমি খিদমা হসপিটালে গিয়ে সেবা কার্যক্রম বন্ধের দির্দেশনা দিয়েছি। এ নির্দেশের ব্যত্যয় ঘটলে আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।

উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে গৌরীপুর খিদমা হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনার সংবাদটি জাতীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় অত্যন্ত গুরুত্বেও সঙ্গে প্রকাশ পায়। পত্রিকায় এ সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার ফলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তদন্ত করে লাইসেন্স বিহীন এ হাসপাতালের ব্যাপক অনিয়ম পেয়ে সকল চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা জারী করেন।

এদিকে উক্ত হসপিটালের কর্তৃপক্ষ বিগত দিনের মত টাকাপয়সার মাধ্যমে তাদের অনৈতিক কার্যক্রমকে ধামাচাপা দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

(এএকে/এএস/নভেম্বর ২১, ২০১৬)