প্রবীর সিকদার


সম্প্রতি ঢাকার রাস্তায় আন্তর্জাতিক ট্যাক্সি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান উবের কার্যক্রম শুরু করেছে। বিশ্বের ৭৪টি দেশের ৪৫০টি শহরে উবের সুবিধা রয়েছে। শহরগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ৫০ লাখেরও বেশিবার উবের ব্যবহার করে ট্যাক্সি ভাড়া করা হয়। ভাড়া অন্যান্য ট্যাক্সির চেয়ে তুলনামূলক কম।

কিন্তু ঢাকায় উবেরের কার্যক্রম শুরু হতে না হতেই বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বলেছে, অনলাইন ভিত্তিক ট্যাক্সি সার্ভিস 'উবের' সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে ঢাকায় পরিচালিত হয়ে আসছে, যা মোটরযান আইন ও বিধির পরিপন্থী। সরকারের অনুমতি ছাড়া ঢাকার রাস্তায় কোনো ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস চালু করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি তথা বিআরটিএ'র ভাষ্যমতে 'উবের' শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে।

অথচ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের উপস্থিতিতে ঢাকায় উবের তাদের ট্যাক্সি সার্ভিস চালু করেছে। উবের চালু হওয়ার সময় ওই প্রতিমন্ত্রী স্বকণ্ঠে বলেছিলেন, ' স্মার্ট শহর ডিজিটাল বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঢাকায় উবের এর যাত্রা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি মাত্র একটি বাটন চেপেই উবের আমাদের দৈনন্দিন পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও সহজ করে তুলবে। সর্বোপরি উবের বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি অভাবনীয় সম্ভাবনার সূচনা ঘটাবে।'

একজন প্রভাবশালী প্রতিমন্ত্রীর সক্রিয় উপস্থিতিতে ঢাকায় উবের তাদের ট্যাক্সি সার্ভিস চালু করেছে। অথচ বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বলেছে, অনলাইন ভিত্তিক ট্যাক্সি সার্ভিস 'উবের' সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে ঢাকায় পরিচালিত হয়ে আসছে, যা মোটরযান আইন ও বিধির পরিপন্থী। বিআরটিএ'র ভাষ্যমতে 'উবের' শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে।

তাহলে কি আমরা ধরে নিতে পারি, সরকারের একজন প্রভাবশালী প্রতিমন্ত্রী উবেরের অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনায় সহযোগিতা করেছেন! নাকি ওই প্রতিমন্ত্রী বৈধ আর অবৈধের পার্থক্য বোঝেন না! বিআরটিএ'র ভাষ্যমতে 'উবের' শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে। আর এই সূত্র ধরে প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে, উবেরের অপরাধ শাস্তিযোগ্য হলে, ওই প্রতিমন্ত্রী কি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেননি?

(পিএস/এএস/নভেম্বর ২৫, ২০১৬)