ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সর্বাত্বক প্রচেষ্টা চালানো স্বত্বেও ঈশ্বরদীতে বাল্যবিবাহ বন্ধ হচ্ছে না। গোপনে এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহের ঘটনা অহরহ ঘটছে। বিগত তিন মাসে মাত্র তিনটি ঘটনা প্রশাসনের নজরে আসায় ভাম্যমান আদালত শাস্তি প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। এসব ঘটনায় সর্বোচ্চ ২ মাসের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায় হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

সোমবারও ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিল মাহমুদ বাল্যবিবাহের ঘটনায় বরকে এক মাসের জেল এবং উভয় পরিবারের ৩ অভিভাবককে জরিমানা করে শাস্তি প্রদান করেছেন।

জানা যায়, মাঝগ্রাম গ্রামের জনৈক বাদশা মিঞা তার পুত্র নাজমূল হোসেন (২৩) এর সাথে মূলাডুলি ইউনিয়নের পতিরাজপুর গ্রামের আব্দুল গণি মিঞার দাখিল মাদ্রাসায় ৭ম শ্রেণী পড়ুয়া ১৩ বছরের শিশু কণ্যার সাথে বিয়ে ঠিক করে। রবিবার গভীর রাতে গোপনে এই বিয়ে অনুষ্ঠানের সময় এলাকাবাসী থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাৎক্ষণিক তৎপরতা চালিয়ে বর-কনে এবং তাদের অভিভাবককে আটক করে।

সোমবার আটককৃতদের ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করলে মহামান্য আদালত বর নাজমূল হোসেনকে এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া মেয়ের বাবা আব্দুল গণি, মাতা ছালেহা বেগম এবং বরের পিতা বাদশা মিঞাকে এক হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।

উল্লেখ্য, পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো বাল্যবিবাহ বন্ধে সচেতনা বৃদ্ধির জন্য ঈশ্বরদীর বিভিন্ন পর্যায়ে একাধিক সভা করেছেন। এছাড়া উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এব্যাপারে সবসময় তৎপর রয়েছেন। তবু এই বাল্য বিবাহ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। জনপ্রতিনিধিরা এই বিষয়ে কিছু অসাধু কাজীকে দায়ী করেছেন। অসাধু কাজীদের লাইসেন্স বাতিলেরও তাঁরা দাবি জানান। কাজীদের সাথে এব্যাপারে কথা বলে জানা যায়, অভিভাবকরা নিজেরা বিয়ে ঠিক করে আমাদের কাছে আসলে আমরা জন্ম সনদ দেখতে চাই। জন্ম সনদ দেখেই আমরা বিয়ের কাবিন করি।

এ ব্যাপারে গোপন সূত্র জানায়, কেউ কেউ কাজীদের পরামর্শে কম্পিউটারে কারসাজি করে জাল জন্মসনদ তৈরি করে নিয়ে আসে। কাজীরা নিজেদের স্বার্থে অহরহ এই অপকর্মের পরামর্শদাতা বলে জানা গেছে।

(এসকেকে/এএস/নভেম্বর ২৮, ২০১৬)