খুলনা প্রতিনিধি : খুলনার সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যার দায়ে ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এ মামলার ১১ আসামির মধ্যে বাকি দু’জনকে দেওয়া হয়েছে খালাস।

এই হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা বিস্ফোরক মামলার রায়ও ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ এক যুগ পর বুধবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ রব হাওলাদার এ আদেশ দেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সুমন ওরফে নুরুজ্জামান, বুলবুল ওরফে বুলু, আকরাম হোসেন ওরফে বোমারু আকরাম, আলী আকবর শিকদার, সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার, বিল্লাল বেপারী, মিঠুন, সাকা ওরফে সাখাওয়াত হোসেন ও সরো ওরফে সরোয়ার হোসেন।

রায় ঘোষণার সময় সুমন, বুলবুল, আকরাম হোসেন ও আলী আকবর আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। মামলায় যে দু’জন খালাস পেয়েছেন, তারা হলেন- হাই ইসলাম ওরফে কচি ও কচি ওরফে ওমর ফারুক।২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাবের অদূরে ছোট মির্জাপুরে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা।

তিনি খুলনা প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, দৈনিক সংবাদ ও একুশে টেলিভিশনের খুলনা ব্যুরো প্রধান, বিবিসি বাংলা বিভাগের কন্ট্রিবিউটর ছিলেন। সাংবাদিকতা অনন্য অবদানের জন্য মরণোত্তর একুশে পদক পান মানিক সাহা।

ঘটনার দু’দিন পর ১৭ জানুয়ারি খুলনা সদর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) রণজিৎ কুমার দাস বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোশাররফ হোসেন হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছরের ১৯ মার্চ অপর তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার তৎকালীন এসআই আসাদুজ্জামান ফরাজী বিস্ফোরক মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন।

সাক্ষীরা যথাসময়ে সাক্ষ্য না দেওয়ায় মামলাটি অনেকটা গতি হারিয়ে ফেলে। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর অবশেষে বুধবার মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

এদিকে, রায়ে সর্বোচ্চ সাজা না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মানিক সাহার পরিবার ও সহকর্মী সাংবাদিকরা।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ৩০, ২০১৬)