সাঈদ সরকার


কবিতা মানুষের কথা বলে, সময়ের কথা বলে, গোটা  বিশ্বের মানবতার কথা বলে। কবিতাকে জন্ম দেয় একজন কবি। কবির খোলাসা পদ্ধতিতে নিপূণ শব্দের জালে জড়ান ভালবাসা ও মানবতার কথা। এর জন্যে কাজ করে দর্শন, জীবন বিশ্বাস, ভালবাসা, সমকালের পর্যবেক্ষণ। এসব দিয়ে তার নিজস্ব চেতনার স্বাক্ষর রেখে যান।

তেমনি একজন কবি কাব্য ভূবনে উদীয়মান নবীন নক্ষত্র কবি সুমন রায়হান। তিনি ১৯৮৪ সালের ৪ ডিসেম্বর বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার লক্ষণকাঠী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কবি সুমন রায়হান অদম্য চেতনার সাথে আত্মপ্রকাশ করেন “হৃদয়ে যে গান আসে” (২০১২) কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে। কবি কথকবৃত্তির মাধ্যমে কাব্যচর্চায় বাকভঙ্গি করছেন পাঠকের জন্য। সমকালিন প্রেক্ষাপট জীবন দর্শন বানী রূপক সাংকেতিক প্রতীকের ব্যবহারের স্বগর্ব বহন করেন। তবে তার সমকালিন কাব্যগ্রন্থ “যেতে যেতে সমুদ্র” (২০১৪) আরও প্রাণবন্ত। বিশেষ করে গদ্যছন্দের ধারায় নানা আঙ্গিকে তার চেতনার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তার কাব্যগ্রন্থ গুলো আমার দৃষ্টি নন্দিত হয়েছে। তিনি কবিতায় বাস্তব জীবনের সামুদ্রিক ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছেন কবিতার প্রতিটি লাইনে লাইনে-

“ইতিহাস হবো সত্যের ইতিহাস
গর্জে ওঠো হয়ে আন্নাহাজারে
কে কে হতে চাও ইতিহাস?
বুদ্ধিজীবি হাতে কলম ধরো”
(ইতিহাস)
নামক কবিতায় সহজবোধ্যতায় আন্নাহাজারের মতো মেধাবীদের পেতে চান সময়ের স্রোতে যা বড় প্রয়োজন।
আবার, (ঝুলে আছে বর্তমান) কবিতায় সমকালিন

পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাবলে খোলার চেষ্টা করেছেন আলোকের দ্বার। কবি বলেছেন তার কবিতায়-
“অন্ধকারের সকল বন্ধন ছিন্ন করে
আলো আসবেই
আসতে তো তোমাকেই হবেই
হে মহাকাল”।
(হে মহাকাল)
দৃঢ় বিশ্বাসে বলছেন আগামী সম্ভবনার কথা। সঙ্গী ও হতে চান সুবর্ণ সময়ের আত্মমানবতার জন্যে আদি স্থান ত্যাগ করে। প্রশ্ন ছুঁড়েছেন পাঠকের মনে, উত্তরও দিয়েছেন ছন্দেবন্ধে। ভালবাসার প্রগাঢ় নিকুঞ্জের এক একটি ইট যেন তার শব্দে গাঁথা। তার দর্শন শিশুকে নিয়ে শিশুই আগামী দিনের নতুন মহাবিশ্ব গড়বে এটি তার লেখায় লক্ষণীয়। মূলত তার সব কবিতায় প্রায়োগিক চেতনা খুবই স্বচ্ছ। বলতেই হয় তিনি একজন সচেতন কবি। তার কবিতা পড়লেই খুব সহজেই বুঝা যায়। তিনি মানবতার স্বপক্ষে, ভালবাসার স্বপক্ষে কথা বলেছেন। সমকালিন সংকট উত্তরণে ইঙ্গিত করেছেন তার কাব্যকথায়। কবি সুমন রায়হান তার অনেক কবিতায় সমাজের সকল পেশার মানুষকে চেতনার দক্ষতায় অনুপ্রেরণা দেয়ার প্রয়াস করেছেন। আমার বিশ্বাস তার শব্দমালা পড়লেই পাঠকের বিবেকের দ্বার খুলে বইবে বেঁচে থাকার প্রেরণা। কবির কাব্যচেতনা ছড়িয়ে পড়বে পাঠক প্রিয়তায়। কবি চেতনায় সত্যিই কবি সুমন রায়হান একজন মৌলিক কবি। আমাগী প্রকাশ ও কাব্যচেতনা আরো হবে সমৃদ্ধ। শুভ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।