স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা : শনিবার বিকেল পৌনে ৪টায় গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চীন সফরের সফলতার নানা দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, চীন সফর সফল ও ফলপ্রসু। সফলতার মধ্যে রয়েছে চীনের সহায়তা বাড়ানোর ঘোষণা, দেশটিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তির পরিমাণ ও সংখ্যা বাড়ানোসহ দ্বিপাক্ষিক নানা সহযোগিতার আশ্বাস।

তিনি বলেন, ২১২১ সালের মধ্যে আমরা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবো। এজন্য আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আনার জন্য কাজ করছি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত ও শান্তির দেশে পরিণত করতে চাই। আসুন যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাই। আর সবাই সহযোগিতা করলে এটা বিষয় না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে সুপার হাইব্রিড ধান উৎপাদন ও গবেষণায় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে চীন। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত দেশে পরিণত করতে তিনি চীনের সহযোগিতা চান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চীনে এটা আমার তৃতীয় সফর। এ সফরের মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। ইউনান প্রদেশের গভর্নরের আমন্ত্রণে নবম চায়না সাউথ এশিয়ান সম্মেলনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা তুলে ধরি এবং বাংলাদেশে চীনের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আনুষ্ঠানিক সাক্ষাতে চীনের প্রেসিডেন্ট আমাকে ‘পুরান বন্ধু’ হিসেবে আখ্যা দেন। আমাদের দুই দেশের যে সম্পর্ক তার ভিত্তি বঙ্গবন্ধুর সফর থেকেই শুরু বলে তিনি মন্তব্য করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, চীনের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সম্পর্ক ধীরে ধীরে আরও জোরদার হচ্ছে। অর্থনৈতিক স্বার্থের চেয়ে কৌশলগত স্বার্থে এটি এগিয়ে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়ে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পাটজাত পণ্য ও সুপার হাইব্রিড ধান উৎপাদনে গবেষণার ক্ষেত্রে আমরা চীনের সহযোগিতা চেয়েছি। বাংলাদেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-রামু-কক্সবাজার রেল লাইন স্থাপনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রপতি আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তার দেশ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখতে চায়। বাংলাদেশকে চীন সরকার ভূ-কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। বাংলাদেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে সুপার হাইব্রিড ধান উৎপাদন ও গবেষণায় সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

উল্লেখ, চীনে ৫ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে বুধবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। তার এই সফরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দুটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং দুটি বিনিময়পত্র সই হয়েছে।

গত সোমবার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ পিপল-এ চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খা ছিয়াংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হয়। এসময় বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয় চীন ।

এসব বিষয়সহ চীন সফরের বিস্তারিত তুলতে ধরতেই আজকের এই সংবাদ সম্মেলন আযোজন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুরু


(ওএস/অ/জুন ১৪, ২০১৪)