নওগাঁ প্রতিনিধি : বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের চুড়ান্ত বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বর হলেও ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর রাণীনগর বাসীর জন্য একটি স্মরনীয় দিন। আজকের এই দিনে নওগাঁর  রাণীনগর উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়। স্বাধীনতার সংগ্রামে সাড়া দিয়ে সারা দেশের ন্যায় এই উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা মাতৃভূমিকে শত্রু মুক্ত করে বিজয়ের নতুন স্বাদে মেতে ওঠে। 

মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের ৯মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর নওগাঁর রাণীনগর উপজেলাবাসী আজকের এ দিনে শত্রুমুক্ত হয়ে বিজয় উল্লাস আর “ জয় বাংলা, বাংলার জয়” জয়ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তুলেছিল উপজেলার আকাশ-বাতাস। এ এলাকা পাকি হানাদার মুক্ত করতে অসংখ্য জীবন বলিদান এবং কত অসহায় মা বোনের ইজ্জত লুন্ঠন করেছিল সেই ভয়াবহ দিনগুলিতে তার সঠিক পরিসংখ্যান কেউ জানে না। এছাড়াও পঙ্গুত্বের অভিশাপ আর মা-বাবা, স্বামী, স্ত্রী, ভাই, বোন হারানো অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে এখনও অনেক নারী-পুরুষ বেঁচে আছে। স্বাধীনতার এত বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ তাদের খোঁজ-খবর রাখেনি।

একাত্তরের ৯ই ডিসেম্বর রাণীনগর পাকি-হানাদারমুক্ত করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা থানা সদরে থাকা হানাদার ক্যাম্প চারিদিক থেকে ঘেরাও করেন। পরদিন ১০ ডিসেম্বর ভোরে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ন হয়ে উভয় পক্ষে গোলাগুলির এক পর্যায়ে ১৭ জন রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পন করে।এই সময় পাকি-বাহিনী সান্তাহার অভিমুখে পালিয়ে যায়।

এসময় মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান, আলমগীর কবির, আকতার আহমেদ সিদ্দিকী, আব্দুল মালেক, মোঃ হারুন আল রশিদ, আখতারুজ্জামান রঞ্জু, আমজাদ হোসেন, মীর হোসেন, দুলু, রাজ্জাকসহ আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধারা এই এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। সেই সঙ্গে বিরোচিত লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে রাণীনগরকে হানাদার মুক্ত করেন।

(বিএম/এএস/ডিসেম্বর ১০, ২০১৬)