শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর জেলা সদরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দু’দল শ্রমিকের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের  ১০টি বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুড় করা হয়েছে এতে  উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছে। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

রবিবার দুপুর ২ টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত শরীয়তপুর বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় সংঘর্ষ হয়। শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র বাচ্চু বেপারী এবং শরীয়তপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী আজম মাদবরের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। শহরে এখনো থমথমে অবস্তা বিরাজ করছে। যে কোন সহিংসতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। বাচ্চু বেপারীর সমর্থক জানু কাজির ছেলে রাজু আলম আলী আজম মাদবরের ছেলে ইমনকে মারধর করে। ঘটনা দুই পক্ষের মধ্যে জানাজানি হলে উত্তেজনা ছরিয়ে পরে। প্রথমে আলি আজম মাদবরের সমর্থকরা বাচ্চু সমর্থক উভয় পক্ষের সমর্থকরা প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এতে বাচ্চু বেপারীর সমর্থক উত্তর পালং এলাকার দুলাল বেপারী ও জয়নাল বেপারীর বাড়িতে হামলা করে ৫-৬টি ঘর ভাংচুর করে। এখবর বাচ্চু বেপারী সমর্থকরা জানার পরে আলী আজ্জম মাদবর ও তার বাবা চানমিয়া মাদবর, ভাই ইউনুস মাদবর ও রহমান মাদবরের বাড়িতে আক্রমন করে তাদের বসত ঘর ভাংচুর করে। এসময় দুলাল বেপারীর ছেলে সজীব বেপারী (১৬), মেয়ে দোলন (১৩), প্রতিবেশী রোজিনা বেগম (২৪), আলী আজমের বাবা চান মিয়া মাদবর (৭৫), ছেলে ঈমন (১৫) রাজু আলম (১৬) আহত হয়।

আলী আজ্জম মাদবর বলেন, আমার ছেলে ঈমন পালং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিবে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। পরে জানু কাজির ছেলে রাজু আলম আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে মারপিট করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাচ্চু বেপারী তার সমর্থকদের নিয়ে আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে। এতে আমার বাবা চানমিয়া মাদবরসহ কয়েতজন আহত হয়।

শরীয়তপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়ার ও বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু বেপারী বলেন, স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলী আজ্জম মাদবর ও তার সমর্থকরা দুলাল বেপারী, খলিল সরদার, রাজু আলমদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে ও কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে। সংবাদ পেয়ে আমার সমর্থকরা আলী মাদবরের বাড়িতে পাল্টা হামলা করতে গেলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) এমারৎ হোসেন বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাংচুর হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নতুন করে যে কোন পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্তি পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

(কেএনআই/এএস/ডিসেম্বর ১১, ২০১৬)