স্টাফ রিপোর্টার : টেলিভিশন প্রযুক্তিতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করতে যাচ্ছে দেশের  ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন টেলিভিশন খাতের ইলেকট্রনিক্স, অপ্টিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ডিজাইনিংসহ সকল ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে চলেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটি। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ালটন এবার উদ্ভাবন করেছে আগামী প্রজম্মের কোয়ান্টাম ডট (কিউডি) প্লাস প্রযুক্তির ব্যাকলাইট যুক্ত ‘স্পেকট্রাকিউ-টিভি’। এর কালার প্রদর্শনের সক্ষমতা ৯৯ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত। যা দর্শকদের নিয়ে যাবে বাস্তব রঙের দুনিয়ায়। দেখা যাবে ঝকঝকে বিশুদ্ধ রঙের ছবি।

নতুন এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তির পরিচিতি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে ওয়ালটনের মিডিয়া অফিসে ’ইনোভেটিভ টেকনোলজী ইনট্রোডিউসিং পোগ্রাম’ এর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে ওয়ালটন গ্রুপের ফার্স্ট সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর ও টেলিভিশন সোর্সিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ইনচার্জ প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন ওয়ালটনের নেক্সট জেনারেশন কিউডি-প্লাস প্রযুক্তির স্প্রেকটাকিউ-টিভির স্পেশাল টেকনিক্যাল ও মেকানিক্যাল দিকগুলো তুলে ধরেন।

এ সময় তিনি জানান, ওয়ালটনের নিজস্ব প্রকৌশলী দ্বারা ডেভলপকৃত আগামী প্রজম্মের কিউডি-প্লাস প্রযুক্তির স্পেকট্রাকিউ টিভি’র উদ্ভাবন বিশ্ব টেলিভিশন গবেষণায় ওয়ালটন তথা বাংলাদেশের এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
ওয়ালটনের নতুন প্রযুক্তির এই টিভির কালার প্রদর্শনের সক্ষমতা সাধারন প্রযুক্তির টিভির তুলনায় অনেক বেশি। যেখানে সাধারন প্রযুক্তির টেলিভিশনে কালার প্রদর্শনের ক্ষমতা ৬৮ থেকে ৭০ শতাংশ, সেখানে ওয়ালটনের নতুন প্রযুক্তির এই টেলিভিশন ৯৯ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত কালার প্রদর্শন করবে। যা দর্শকদের নিয়ে যাবে প্রকৃত রঙের দুনিয়ায়।

বিশ্ব টেলিভিশন গবেষণায় ওয়ালটন তথা বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদান সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, বর্তমানে টেলিভিশন প্রযুক্তিতে ওয়ালটনের ২৮টি নতুন প্যাটেন্ট অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। যেগুলো বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে টেলিভিশন গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ও বিপণন বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ইভা রেজওয়ানা, নির্বাহী পরিচালক (বিপণন) এমদাদুল হক সরকার, নির্বাহী পরিচালক (পলিসি এন্ড এইচআরএম) এসএম জাহিদ হাসান, নির্বাহী পরিচালক (পিআর এ্যান্ড মিডিয়া) হুমায়ুন কবীর, অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম, ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর (বিপণন) মোহাম্মদ রায়হান, ওয়ালটন প্লাজা সেলস এন্ড ডেভলপমেন্ট বিভাগের সিনিয়র এ্যাডিশনাল ডিরেক্টর কামাল হোসেন, সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর ফিরোজ আলম, সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর (প্যানেল আরএন্ডডি) প্রকৌশলী সৌরভ আক্তার, টিভি আরএন্ডডি বিভাগের ইনচার্জ প্রকৌশলী ফরহাদ হোসেন মামনুন, সিনিয়র এ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর তাওসীফ আল মাহমুদ, টেলিভিশন বিপণন বিভাগের প্রধান আব্দুল বারী প্রমূখ, মিডিয়া উপদেষ্টা এনায়েত ফেরদৌস প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয় যে, আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য দেশের সর্ববৃহৎ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দর্শকদের জন্য প্রদর্শন করা হবে স্পেকট্রাকিউ টিভি। অনুষ্ঠানে স্পেকট্রাকিউ টিভির বিশেষত্ব বর্ণনা করে প্রকৌশলী সৌরভ আক্তার বলেন, সময়ের বা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ওয়ালটন উদ্ভাবন করেছে সর্বাধুনিক কিউডি-প্লাস প্রযুক্তির প্যানেল যুক্ত স্পেকট্রাকিউ টিভি। যা কিনা টিভির আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এনটিএসসি প্রদত্ত টিভির বর্ণালীর শতভাগই প্রদর্শন করতে সক্ষম।

তিনি বলেন, অন্যান্য এলইডি টিভির ব্যাকলাইটের আলোক উৎস হিসেবে সাধারণত হোয়্যাইট (সাদা) এলইডি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সাদা রঙের এই আলোকবর্ণালী অনেক বেশী বিস্তৃত হওয়ায় পৃথকভাবে লাল, সবুজ এবং নীল রঙের আলোকছটাকে শতভাগ বিশুদ্ধরুপে টিভির পর্দায় রুপান্তরিত করা সম্ভব হয় না।

স্পেকট্রাকিউ টিভির ব্যাকলাইটে আলোক উৎস হিসেবে নীল রঙের আলো উৎপন্নকারী ব্লু (নীল) এলইডি ব্যবহৃত হয়েছে। এর সাথে ব্যবহৃত হয়েছে সর্বাধুনিক সেমিকন্ডাকটর ন্যানো ক্রিস্টাল প্রযুক্তির কোয়ান্টাম ডট সম্বলিত এক নতুন অপটিক্যাল ফিল্ম। যা নীল রঙের আলোকছটাকে উজ্জ্বলতর করে শতভাগ বিশুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক লাল ও সবুজ রঙে পরিণত করে। এতে করে, এই প্রযুক্তির টিভি ডিসপ্লের রঙ প্রদর্শনের সক্ষমতা প্রায় শতভাগ।
টিভি প্যানেলের অভ্যন্তরে সঠিক মান নিয়ন্ত্রণ এবং অত্যন্ত সূক্ষ্মতা বজায় রেখে এর আলোক গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যা আলো এবং ছায়ার মাঝেও অসাধারন কনট্রাস্ট রেশিও তৈরিতে সক্ষম।

ওয়ালটন স্পেকট্রাকিউ টিভির শ্রেষ্ঠত্ব শুধুমাত্র রেজুল্যুশনের সাথেই সম্পর্কিত নয়, এর সম্পর্ক প্রকৃত রঙের সঙ্গেও। এছাড়াও, ওয়ালটনের এলইডি প্যানেল সূর্যালোকেও নূন্যতম আলো প্রতিফলন করে বলে এর কর্মক্ষমতাও অন্যান্য এলইডি টিভির চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি।

(এমএ/এএস/ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬)