আল ফয়সাল বিকাশ, বান্দরবান :পার্বত্য বান্দরবানে বোমাং সার্কেলের জুম খাজনা আদায়ের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান রাজপুণ্যাহ শুরু হয়েছে। ৩দিন ব্যাপী আয়োজিত ১৩৯তম এই রাজপুণ্যাহ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি।

অতিথি ও সিপাহীশালারদের সাথে নিয়ে ১৭তম বোমাং রাজা উচপ্রু রাজবাড়ী থেকে বের হয়ে পায়ে হেঁটে রাজবাড়ী মাঠের মঞ্চে যান। এ সময় রাজা বাহাদুরকে একনজর দেখার জন্য রাস্তার দু’পাশে হাজার হাজার নারী পুরুষ দাড়িয়ে সম্মান জানান। অনুষ্ঠানে মৌজার হেডম্যান কারবারীরা কুর্ণিশ জানিয়ে উপঢৌকন (মদ, মোরগ)সহ জুম খাজনা বোমাং রাজার হাতে তুলে দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বোমাং রাজার ঐতিহ্য শতবছরের পুরানো। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাবে। পর্যটন সম্পর্কে তিনি বলেন, অল্পদিনের মধ্যে বান্দরবানের চেহারা পাল্টে গেছে। পাহাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্য পর্যটক আকর্ষনের প্রধান হাতিয়ার। প্রতিবছর দেশী-বিদেশী অসংখ্য পর্যটক বান্দরবানে আসছে। চাহিদার কারণে দৃশ্যমান অনেক হোটেল মোটেল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শাখাওয়াত হোসেন, বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ জোবায়ের সালেহীন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হারুনর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্নিবান চাকমাসহ ১০৯ মৌজার হেডম্যান ও কারবারীসহ বিভিন্ন দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে রাজপুণ্যাহ উৎসবে যোগ দেয়ার আগে রোয়াংছড়ি থানাভবন ও বালাঘাটাস্থ পুলিশ লাইনস্ স্কুল ভবন উদ্বোধন করেন।

এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা যারা ঢুকে পড়েছে আমরা মানবিক কারণে যতটুকু সম্মান ও সহযোগিতা দেয়া দরকার দেয়া হচ্ছে। মিয়ানমারের সাথে কথা হয়েছে, ভাল একটা সময় সুযোগ হলে তাদের মিয়ানমার ফেরত পাঠানো হবে এবং তারা ফিরে যাবে এটা আমাদের বিশ্বাস।

তিনি পাহাড়ে অস্ত্র উদ্ধার বিষয়ে বলেন, অস্ত্র উদ্ধার একটি চলমান প্রক্রিয়া। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজী এগুলোর বিরুদ্ধে প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ফলে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। মানুষ সচেতন হয়েছে, তারা বুঝেছে জঙ্গীবাদ সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু নয়। সেজন্য মানুষ ঘুরে দাড়িয়েছে। মানুষ ঘুরে দাড়ানোর কারণে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস দমন হয়েছে বলে তিনি তার অভিমত ব্যক্ত করেন।



(এএফবি/এস/ডিসেম্বর ২২, ২০১৬)