আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ইরাকের বর্তমান সংকটের জন্য ২০০৩ সালের ইঙ্গ-মার্কিন হামলা দায়ী নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি তাঁর ওয়েবসাইটে লিখেছেন, সিরিয়া-সংকটের বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা থেকেই আজ ইরাকের এ অবস্থা। ইরাকে যে এমনটি ঘটবে তা আগেই অনুমান করা হয়েছিল। আজ রোববার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ব্লেয়ার লিখেছেন, ‘ইরাকের বর্তমান সংকট আমাদের সৃষ্টি—এ ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমরা এটি করিনি। ২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনের পতনের ফলস্বরূপই আজকের এ সংকট—এ ধারণা খুবই উদ্ভট।’ ব্লেয়ার বলেন, ইরাকের মসুল শহর দখলে নেওয়ার জন্য সুন্নি বিদ্রোহীদের এ পরিকল্পনা হয়েছে সিরিয়া সীমান্তে। তিন বছর ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। এতে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও লাখ লাখ মানুষ আহত হয়েছে। অনেকেই হয়েছেন গৃহহীন।

যুদ্ধে বাশার আল আসাদের সরকার বিদ্রোহীদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে। এর প্রতিবাদে সিরিয়ায় বিমান হামলা চালানোর প্রস্তাব উঠলেও গত বছরের আগস্টে যুত্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্যরা তা নাকচ করে দেন।

এ বিষয়টি তুলে ধরে ব্লেয়ার লিখেছেন, ‘সব সময় আমরা এ ধরনের উদ্যোগ থেকে দূরে থেকেছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, এটি করা হলে ভালো হতো।’

২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর আগ্রাসনে ইরাকে সাদ্দাম হোসেন সরকারের পতন হয়। তখন থেকেই দেশটিতে সহিংসতা চলছে। গত মঙ্গলবার ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর মসুল দখল করে নেয় সুন্নি জঙ্গিগোষ্ঠী।

জঙ্গিদের এই অপ্রতিরোধ্য তত্পরতায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ইরাক-পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধভাবে ইরাকের পাশে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

একটি কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাতে ওবামা প্রশাসনের প্রতি অনানুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছেন ইরাকের কর্মকর্তারা। ইরাক সরকারকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে ওবামা প্রশাসন। এই সহায়তার মধ্যে ড্রোন হামলা থাকতে পারে। তবে দেশটিতে আবার সেনা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

(ওএস/এএস/জুন ১৫, ২০১৪)