নিউজ ডেস্ক : দাম্পত্য সম্পর্কের সূচনা হয় বিয়ে উৎসবের মধ্য দিয়ে, কিন্তু তা সংহতি লাভ করে হানিমুনের মধ্য দিয়ে। হানিমুন যদি হয় দাম্পত্য সম্পর্কের খাবারের মূল পর্ব, তবে বিয়েটা হলো অ্যাপেটাইজার বা ক্ষুধাবর্ধক।

এটা সবার জানা যে, বিয়ে উৎসবের ঝুট-ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে পুনরায় চাঙ্গা হওয়ার জন্য হানিমুনই সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অংশ। সুতরাং সঠিক উপায়ে দাম্পত্য জীবনের যাত্রা শুরু করার জন্য বিশ্বের সেরা ১০ রোমান্টিক হোটেলের যে কোনো একটি বেছে নিন। হোটেলগুলোর কোনো একটিতে হানিমুন করতে পারলে তা আপনার স্মৃতিতে চির অম্লান হয়ে থাকবে।

ইসলা হোলবোক্স, মেক্সিকো
ক্যাসা লাস তোরতুগাসে রয়েছে সর্বাধুনিক ফ্যাশনের জিনিসপত্র সম্বলিত আবাসনের ব্যবস্থা। হোটেলটিতে আরো রয়েছে প্রতিদিন যোগ ব্যায়ামের ক্লাস করার ব্যবস্থা, স্পা সার্ভিস এবং চার ডলারে বাইক ভাড়া করার সুবিধা। হোটেলের ভিআইপি হোলবক্সটিতে আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হোয়েল শার্ক’র সঙ্গে সাঁতার কাটতে পারবেন। আর ইসলা হোলবোক্স প্রকৃতপক্ষে ম্যানগ্রোভ ফরেস্টে ঘেরা একটি সংরক্ষিত ও খাঁটি জেলে গ্রাম। গ্রামের মাঝখানে রয়েছে একটি ঝিলিমিলি জলাধার যেখানে আপনারা স্বামী-স্ত্রী মিলে গোসল ও সাঁতার কাটতে পারবেন। ধারণা করা হয় এ জলাধারটি একসময় জলদস্যুদের খাবার পানির উৎস ছিল।

সান ইগন্যাসিও, বেলিজ
বেলিজের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্যান ইগন্যাসিও শহরে আপনি একইসঙ্গে পাবেন নির্জনতা ও রোমান্স। এ ছাড়া জুনানতুনিখের মনোরম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো আপনাকে মায়া সভ্যতার হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে পরিচয় করিয়ে দেবে। শহরটি থেকে মাত্র ২০ মিনিটের পায়ে হাঁটা পথের দূরত্বে মাউন্টেন পাইন রিজ ফরেস্ট রিজার্ভের ভেতরে রয়েছে বাটারফ্লাই ফলস। জলপ্রপাতটি হানিমুনে আসাদের জন্য যেন সত্যিকার অর্থেই একটি হটস্পট। এ ছাড়া সান ইগন্যাসিও থেকে বিমানে করে মাত্র এক ঘণ্টার আকাশ পথ পাড়ি দিয়ে সান পেড্রোর অ্যাম্বেরগিস কায়াতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রেট ব্যারিয়ার রিফটিতে গিয়েও আপনি ডুব মেরে আসতে পারেন।

জুনো, আলাস্কা
জুনোতে একটি রেইন ফরেস্ট গার্ডেন ও পাশাপাশি একটি ভাসমান বরফে পূর্ণ পুকুরের মাঝামাঝি রয়েছে পিয়ারসনস পন্ড এবং অ্যাডভেঞ্চার স্পা। জুনো শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে ঠিক পশ্চিমে অবস্থিত ডগলাস দ্বীপ। এটি জোয়ার-ভাটায় সিক্ত। দ্বীপটি দম্পতিদের জন্য হতে পারে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চারমূলক কর্মকাণ্ডের উৎস। এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে ঘোরাফেরা করা, ভাসমান বরফের উপর দিয়ে জাহাজে ভ্রমণ, রেইন ফরেস্টের ভেতরে জিপে চড়ে ঘোরাঘুরি এবং তিমি দর্শন।

পোর্টোফিনো, ইতালি
পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী বেলমোন্ড হোটেল স্পেলডিডোর আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে আপনি পোর্টোফিনোর বর্ণময় হারবারটি দেখতে পাবেন। সুরকি বিছানো রাস্তা দিয়ে সামান্য হাঁটা পথে পৌঁছে যেতে পারবেন একটি নির্জন খাড়িতে, যেখানে রয়েছে স্বচ্ছ পানির গোপন মজুদ।

মাউই, হাওয়াই
এখানকার নাপিলি উপসাগরের তীরে রয়েছে নাপিলি কাই বিচ রিসোর্ট। সাগরতীরে রাতের তারাভরা আকাশের নিচে ‘না হোকু ডিনার’ নামে একটি অতি ব্যক্তিগত রোমান্টিক ডিনারের আয়োজন করা হয়।

ম্লিজেট, ক্রোয়েশিয়া
সাগরের পানির পুল ও স্পা ফ্যাসিলিটিসহ বিলাসবহুল হোটেল ওডিসেজ এ দ্বীপের একমাত্র হোটেল। ম্লিজেট ন্যাশনাল পার্কের পাইন এবং ওক ফরেস্টের ভেতরে এটি অবস্থিত। ক্রোয়েশিয়ার সর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত দ্বীপটি ডুব্রোভনিক নামের বিখ্যাত শহর থেকে নৌকায় চড়ে মাত্র দুই ঘণ্টায় এখানে পৌঁছানো যায়। গ্রিক রূপকথা অনুযায়ী দেবতা ওডিসিয়াস এই দ্বীপেই সাত দিন ধরে জলপরী ক্যালিপসোর প্রেমদাস হয়ে ছিলেন।

ত্রিনিদাদ, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো
ত্রিনিদাদের নাটকীয় উত্তর উপকূল বরাবর গ্রান্ডে রিভিয়েরা নামের একটি জেলেপল্লীতে অবস্থিত একটি ছোট্ট পরিবার পরিচালিত অ্যাকাজোউ হোটেল। হামিংবার্ডের অভয়ারণ্য, জেরেট, সিল্ক কটন ট্রির শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য, মাতাল করা সবুজ ভূদৃশ্য এবং এল তুচেচে পাহাড়- এসব হলো ত্রিনিদাদের উপভোগ্য জিনিস।

ডুয়োরো, পর্তুগাল
এখানকার ঐতিহাসিক ভিদাগো প্যালেস হোটেলে রয়েছে এমন সব স্যুট যার তুলনা শুধু ডে গৌরনায়ে সিল্ক ওয়ালপেপার এবং ১৮ শতকীয় প্রাচীন জিনিসপত্রের সঙ্গেই হতে পারে। যুগলদের জন্য ভিদাগোতে রয়েছে দুটি প্রধান আকর্ষণীয় জিনিস : এর স্পা এবং গলফ। আর ডুয়োরো উপত্যকায় গত দুই হাজার বছর ধরেই উৎপন্ন হয়ে আসছে বিখ্যাত সব মদ।

কানকুন, মেক্সিকো
ক্যাসা ম্যাগনা ম্যারিয়ট কানকুন সাগরতীরের আঙ্গিনায় রোমাঞ্চকর সব তৎপরতায় লিপ্ত হতে পারবেন হানিমুনে আসা যুগলরা। এ ছাড়া আর্জেন্টাইন স্টিক হাউজ ও থাই রেস্টুরেন্ট থেকে আনা আন্তর্জাতিকমানের উন্নত খাবার এবং মেক্সিকোর বিভিন্ন ধরনের টাকিলার স্বাদও নিতে পারবেন।

ভোমো দ্বীপ, ফিজি
ভোমো আইল্যান্ড রিসোর্ট ফিজিতে তিন শয্যার কক্ষের স্যুটগুলোর সঙ্গে রয়েছে ব্যক্তিগত পুল, লিভিং রুম এবং ডাইনিং এলাকা। সবসময় নতুনের মতো চকচকে স্যুটগুলোতে যে বড় বড় আকারের বাথটাব রয়েছে- সেগুলোতে অনায়াসেই দুইজন মানুষ একসঙ্গে গোসল করতে পারবেন। এ ছাড়া আপনি যদি প্রাকৃতিক পরিবেশে গোসল উপভোগ করতে চান তবে আপনার জন্য রয়েছে আউটডোর বাথটাবের ব্যবস্থা। এ ছাড়া ভোমো লাই লাই দ্বীপের নির্জন পরিবেশে করতে পারেন জম্পেশ পিকনিকের আয়োজন।