আবু নাসের


দেশে কর্ম সংস্থানের সুযোগ কম, তাই বিদেশে পাড়ি জমাতে হয় অনেক বেকার যুবককে। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত টাকা যখন দেশে আসে সে টাকা দিয়ে পরিবারের লোকজন তাদের যাবতীয় প্রয়োজন মেটায়। ওই টাকায় দেশের অর্থনৈতিক খাতের একটা বিরাট চাহিদা পূরণ হয়। দেশের একদল যুবক মা-বাবা, আত্মীয় স্বজন ছেড়ে দূর বিদেশে পাড়ি জমিয়ে অনেক কষ্ট আর পরিশ্রম করে টাকা রোজগার করছে। অপর দিকে দেশে অন্য একদল যুবক ওঁত পেতে বসে থাকে, বিনা পরিশ্রমে সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজির মাধ্যমে টাকা করায়ত্ব করবার জন্য।

প্রবাসীদের আত্মীয় স্বজনরা যখন বিদেশের টাকায় এক টুকরো জমি কিনে মাথা গোঁজার ঠাই তৈরি করতে চায়, তখন ওই এলাকার চিপা চাপার সন্ত্রাসিরা মিষ্টি খাবার নামে চাঁদা দাবি করে, টাকা না দিলে বাড়ি বানানো বন্ধ হয়ে যায়। বলতে দ্বিধা নেই, অনেক ক্ষেত্রেই এদের পেছনে কাজ করে স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের অশুভ শক্তি।

অনেক শ্রমিক কল কারখানায় কাজ করে, মাস শেষে বেতন পেলে স্থানীয় সন্ত্রাসিদের হাতে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে ওই এলাকায় থাকা যাবে না এবং কাজও করা যাবে না, তাই বাধ্য হয়েই চাঁদা দিতে হয়।
রাস্তার পাশের ফুটপাতের খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলনের দায়িত্ব নেয় পুচকা সন্ত্রাসিরা, যার একাংশ পায় প্রশাসন, কিছু অংশ পায় স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা এবং বাকিটা নেয় ওই চিপা চাপার পুচকা সন্ত্রাসিরা।

দেশের এক শ্রেনীর যুবকেরা পরিশ্রম করবে আর আরেক শ্রেণী চাঁদাবাজি করে চলবে এমনটা তো হতে পারে না!

সব আমলেই চাঁদাবাজির ধরণ একই রকমের।যে দল সরকারি ক্ষমতায় থাকে চাঁদাবাজগুলো তাদেরই ব্যানারে চলে । তার মানে কি সব আমলের সরকারই এইসব চাঁদাবাজকে সহযোগিতা করছে ! যদি তাই না হবে, তবে ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা যারা নিচ্চে তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্চে না!

কাজ কর্ম বাদ দিয়ে কোন এক রাজনৈতিক দলের পরিচয় নিয়ে যারা মোটর সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ায় ওরাই তো এই সমাজের চাঁদাবাজ। সরকারের উচিৎ ওদের আয়ের উৎস খুজে বের করা। যদি সরকার তা করতে ব্যর্থ হয় তবে ধরে নিতে হবে, সরকারই তাদের লালন পালন করছে ;আর আমরা সাধারণ জনগন দিনের পর দিন সেই নির্যাতনের শিকার।

লেখক : পরিবহন শ্রমিক।