রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর পুঠিয়ার আব্দুস সামাদ ওরফে ফিরোজ খাঁ ওরফে মুসা রাজাকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে রবিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলা সদর থেকে পুঠিয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

মুসা রাজাকার উপজেলার সেনভাগ এলাকার বাসিন্দা। গত ৯ ও ১০ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ তদন্তে আসে। তবে মানবতা বিরোধী অপরাধে নয় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে।

পুঠিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় সন্দেহভাজন হিসেবে রাতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। রাতেই পুলিশ বাদী হয়ে মামলাও দায়ের করেছে। ওই মামলায় সোমবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গত ৯ ও ১০ জানুয়ারি এলাকায় এসে মুসার রাজাকারের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ তদন্ত করেছেন আর্ন্তজাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরিদর্শক ফারুক হোসেন। এর আগে গত ২৭ জুলাই রাজশাহীর সার্কিট হাউসে তিনি স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য নেন। তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি ট্রাইব্যুনালকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই তাকে মানবতা বিরোধী অপরাধে গ্রেফতার দেখানোর কথাও জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

জানা গেছে, পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের হাজি আব্বাস উদ্দিনের ছেলে মুসার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। পুঠিয়ার বাঁশবাড়িয়া, পশ্চিমভাগ এবং গোটিয়া গ্রামে আদিবাসী ও বাঙালিদের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এ তদন্ত করে আর্ন্তজাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মুসার হাতে নিহত পশ্চিমভাগ গ্রামের শহিদ আবদুস সামাদের স্ত্রী রাফিয়া বেগমের দাখিলকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই তদন্ত হয়।

উল্লেখ্য, একাত্তর সালে বাঙালি ও আদিবাসী হত্যা ও লুটপাটের পর দেশ স্বাধীন হলে মুসা রাজাকার ভারতে পালিয়ে যায়। এরপর ৭৫ সালে গোপনে দেশে ফিরে আদিবাসী পল্লীর ১৫২ বিঘা জমি দখলের চেষ্টায় অপতৎপরতা শুরু করে।

পুলিশ মুসাকে গ্রেফতার করায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তার হাতে নিহত ও নির্যাতিতদের পরিবারের সদস্যসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। এখন মুসার যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুরও দাবি করছেন তারা।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ২৩, ২০১৭)