সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান হত্যা মামলার আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। আসামীরা প্রতি রাতে তার বসত বাড়িতে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

আসামীদের ভয়ে শিশু সন্তানদের নিয়ে নিহত আমানের বিধাবা স্ত্রী ও বাদী নিজে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন আমান হত্যা মামলার বাদী নিহতের মাতা মোছাঃ ফাতেমা খাতুন।
সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে ফাতেমা খাতুন বলেন, গত ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমীতে জেলা বিএনপির কর্মী সমাবেশ চলাকালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ও জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের নির্দেশে আইনুল ইসলাম নান্টা, তারিকুল হাসান, সোহেল আহম্মেদ মানিক, ফারুক ড্রাইভার, মাসুম বিল্লাহ শাহীন, এড. কামরুজ্জামান ভুট্টো, আবুল হাসান হাদী, তাজুল ইসলাম রিপন ও খোরশেদ মেম্বরসহ আরও অনেকে এই হত্যাকান্ডে অংশ নেয়। সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলের মৃত্যুতে তারা অসহায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এঘটনার কিছুদিন পর আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমানের বিধবা স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া আসামীরা প্রতিরাতে তার বসত বাড়িতে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তাদের ভয়ে রাতে বাড়িতে কেউ ঘুমাতে পারেননা। আসামীদের ভয়ে শিশু সন্তানদের নিয়ে নিহত আমানের বিধাবা স্ত্রী ও তিনি নিজে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই মামলার আসামী আনোয়ার হোসেন চান্দু ও আইনুল ইসলাম নান্টার চাচা রবি তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। তারা আমাদেরকে মামলা মীমাংসা করে নিতে ও স্বাক্ষীদেরকে সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মামলার এজাহার নামীয় আসামী ধুলিহার মেল্লেকপাড়া গ্রামের মেম্বর খোরশেদ ও ওমরাপাড়া গ্রামের মোস্তাক উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জামিন নিয়ে এসে আদালতে হাজির না হয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ব্রক্ষ্মরাজপুর পুলিশ ক্যাম্পের সহকারি উপপরিদর্শক আমিরুল মোমিন তাদের দু’জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদেরকে ঘোরা ফেরার সুযোগ করে দিয়েছেন। প্রায়ই ধুলিহার বাজারে খোরশেদ মেম্বরের সাথে সহকারি উপপরিদর্শক আমিরুল ও মোমিনকে একসাথে বসে গল্প করতে ও চা খেতে দেখা যায়। তিনি প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, আইনুল ইসলাম নান্টা, আনোয়ার হোসেন চান্দু, খোরশেদ, মোস্তাকসহ অন্যান্য আসামীরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে নিম্ন আদালতে হাজির না হয়ে কিভাবে তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে?
সংবাদ সম্মেলনে আসামীদের গ্রেফতার করার পাশাপাশি আদালতে দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিল করে বিচার কাজ শুরু করার জন্য পুলিশ সুপারসহ সংশিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
(আরকে/এএস/জুন ১৬, ২০১৪)