মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :মৌলভীবাজারে সদর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ব্যানারে আয়োজিত কাশিনাথ আলাউদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে প্রায় দুইমাস ব্যাপি চলে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে মেলা। প্রথমদিকে শান্তিপূর্ণ ভাবে মেলা চললেও শেষ পর্যায়ে এসে বিজয় মেলায় চলে পঙ্গু বিরঙ্গনা ও অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে লটারীর নামে প্রতারণার মহোৎসব। প্রতারিত হল হাজার হাজার লোকজন। নিজেদের মধ্যেই ভাগবাটোয়ারা করে হাতিয়ে নিল প্রায় অর্ধকোটি টাকা আয়োজকরা ।

মেলা শেষে র‌্যাফেল ড্র এর নামে লটারী নিয়ে নিম্নআয়ের গরিব ও সাধারণ মানুষকে করা হচ্ছে বিপথগামী। লুটে নেয়া হয় লাখ লাখ টাকা। বাড়তি দর্শক আকর্ষণের জন্য মেলায় রাখা হয় বিনোদনের ব্যবস্থা। সন্ধ্যার পর বেড়ে যায় বখাটেদের আড্ডা,বিভিন্ন সময়ে ঘটে নানা অঘটন। সরাসরি এমসিএস এর মাধ্যমে সম্প্রচার করা হবে, কেউ প্রতারিত হবেননা, আপনার ভাগ্যকে যাচাই করে নিন। এ সুযোগ আর আসবেনাসহ মেলার দর্শকদের আকৃষ্ট করতে দেয়া হয় নানামুখী প্রলোভন। পঙ্গু বীরঙ্গনা ও অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের দোহাই দিয়ে মেলার প্রবেশ টিকেটকে পাঁচ কালার করে ভিন্ন পাঁচ কালার টিকেট বিক্রির জন্য সারা জেলার সর্বত্র লটারী হিসাবে চালিয়ে দিচ্ছে মেলা আয়োজকরা। যেভাবেই হোক বিপুল পরিমান অর্থ কামাই করতেই এসব প্রয়াস।

জানাগেছে মেলা প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন আয়োজকরা। মেলায় লটারীর কোন অনুমোদন নেই তার পরেও কেনো আপনারা মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সারা জেলায় ১০টাকা মূল্যে লটারী বিক্রি করছেন এবং সাধারণ জনগনের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিলেন এ প্রতিবেদক এর এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজয় মেলা কমিঠির পরিচালক ও সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ আনসার আলী প্রতারণার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন,- মেলায় একটু ক্ষতি গ্রস্থ হয়ে গেছি তাই লটারী দিয়েছি। আর মেলায় আমাদের পাঁচলক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে তার পরেও আমরা সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের একলক্ষ টাকা সহায়তা দেবো।

তিনি আরো জানান জেলা প্রশাসক মেলার হিসেব চাইলে আমরা তা দিতে প্রস্তুত। মেলায় লটারী চলাকালীন সময়ে তালাবদ্ধ ড্রাম এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোনে এ বিষয়ে কথা না বলে সরাসরি কথা বলতে বলে ফোন কেটে দেন।

এ ব্যপারে জানতে কথা হয় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ তোফায়েল ইসলাম এর সাথে- তিনি জানান,মুক্তিযোদ্ধার ব্যানারে আয়োজিত মেলায় লটারী বিক্রি হচ্ছে তা আমার জানা নাই। মেলার প্রবেশ টিকেটকে লটারী হিসাবে বিক্রি করলে সেটাতো একটা প্রতারণা। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের আমি সর্বোচ্চ সম্মান জানাই,কিন্তু কেউ যদি মুক্তিযোদ্ধাদের নাম নিয়ে প্রতারণা করে সেটা দুঃখজনক। আর আগামীতে এখানে কাউকেই মেলা করতে দেয়া হবেনা। তিনি বলেন মেলায় কত টাকা আয় হয়েছে তা তাদের কাছে আমি হিসেব চাইবো । তিনি এসব বিষয় তুলে ধরাতে গণমাধ্যমকেও ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য কাশিনাথ আলাউদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল এর ব্যানারে মাস ব্যাপি মেলার আয়োজন করে। তবে মেলা চলে পুরো জানুয়ারি মাসজুড়েই।






















(এমএকে/এস/জানুয়ারি ২৭, ২০১৭)