স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : এই মৌসুমে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে তেমন চনমনে মেজাজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। যেমন পাওয়া গিয়েছিলো গত মৌসুমে। তবে রিয়াল মাদ্রিদকে পেয়েই যেন জেগে উঠলো ‘হলুদের অহম’। হ্যাঁ, হলুদের অহম’ই তো। ক্রিকেটের অস্ট্রেলিয়া কিংবা ফুটবলের ব্রাজিলের ন্যায়। আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণই যাদের প্রাণ। আর তাতেই যেন ভেস্তে গেলো পৃথিবী সেরা ফুটবল ক্লাবের জারিজুরি।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোহীন রিয়ালের দুর্বলতা খুব স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়লো এদিন। যাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে ২-০ গোলে হারলো রিয়াল। তবে প্রথম লেগের ৩-০ গোলের জয়ে ৩-২ অগ্রগামিতায় ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতাটির শেষ চার নিশ্চিত করে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। আর বিদায় ঘণ্টা বাজে বরুশিয়ার।


মঙ্গলবার সিগন্যাল ইদুনা পার্কে হাঁটুর চোটের জন্য মাঠে নামতে পারেননি রোনালদো। রিয়ালের ইতালিয়ান বস কার্লো আনচেলত্তি তাকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রেখেছিলেন। তাতেই যেন আত্মবিশ্বাসহীনতার ভূত পেয়ে বসে রিয়ালকে। পেনাল্টি পিস, ভূল পাস, পজিশন নিতে ব্যর্থতা, গোলমুখে হোঁচট খাওয়া সব মিলিয়ে মাঠে হাহাকার সৃষ্টি করে করিম বেনজেমা-অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ারা। সেই সুযোগটি নেয় বরুশিয়া।


এদিন ম্যাচের ১৭ মিনিটে ডি মারিয়ার পেনাল্টি মিস রিয়ালের উল্টো-পূরাণের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে। এরপর প্রথমার্ধে মার্কো রিউস জোড়া গোল করে ডর্টমুন্ডকে স্বপ্নের শুরু এনে দেন। সারা ম্যাচে ২-০ ব্যবধান ধরে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় ডর্টমুন্ড। যদিও হেরেও প্রথম পর্বে ঘরের মাঠে ৩-০ জয়ের সুবাদে শেষ চারে জায়গা করে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। গত বছর সেমিফাইনালে এই ডর্টমুন্ডের কাছে হেরেই চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। গত বছর দু-দুবার জার্মানির এই দলটির কাছে হেরেছিল রিয়াল। তাই অ্যাওয়ে ম্যাচে এদিন শুরু থেকেই সর্তক ছিল আনচেলত্তির দল। রোনালদোর চোট গুরুতর না-হলেও তাকে নামানোর ঝুঁকি নেননি রিয়াল কোচ। কিন্তু, সিআরসেভেনকে ছাড়া রিয়ালের আক্রমণ যে কতোটা ভোঁতা এদিন ফের তার প্রমাণ পাওয়া গেল। গ্যারেথ বেল, করিম বেনজেমা ও ডি মারিয়ারা নজর কাড়তে পুরোপুরি ব্যর্থ হলেন।


অন্য দিকে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ডর্টমুন্ড। ফলশ্রুতিতে ২৪ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রিউস। রিয়াল স্প্যানিশ গোলকিপার ইকার ক্যাসিয়াস এগিয়ে এলে ফাঁকা জালে বল ঠেলতে ভুল করেননি এই জার্মান মিডফিল্ডার। এরপর ৩৭ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে ডর্টমুন্ডকে শেষ চারে যাওয়ার স্বপ্ন দেখান সেই রিউসই। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। প্রথমার্ধে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে রিয়ালের গোলমুখ খুলতে পারেনি জার্মানির দলটি। ফলে তাদের বিদায় ঘণ্টা বেজে যায়। এদিকে দলের পারফরম্যান্সে অসন্তোষ প্রকাশ করে ক্যাসিয়াস বলেন, ‘আমরা জঘন্য ফুটবল খেলেছি। কিন্তু, আশা করবো এটা আমাদের ওয়েক-আপ কল। ভাগ্যিস কোয়ার্টার ফাইনালেই এটা ঘটেছে, পরের দিকে হয়নি।

(ওএস/পি/এপ্রিল ০৯,২০১৪)