আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচার-নিপীড়ন এবং সহিংসতার ভয়ংকর সব সাক্ষ্য প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ভয়ংকর সব ঘটনার সাক্ষ্য প্রমাণ জোগাড় করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতরের কর্মকর্তারা। তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দু’শোর বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমের সঙ্গে কথা বলেছেন। খবর বিবিসির।

রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা এক নারী জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তাকে যখন ধর্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছিল, তখন তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে এসে তাকে রক্ষার চেষ্টা করে। তখন হামলাকারীদের একজন তার মেয়েকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।

শুক্রবার প্রকাশ করা এক রিপোর্টে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দফতর বলছে, রাখাইনে যা ঘটছে তা মানবতাবিরোধী অপরাধ। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমরা সেখানে হত্যা, ধর্ষণ এবং এ ধরণের অনেক সহিংস ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন।

অর্ধেকের বেশি নারী জানিয়েছেন, তারা ধর্ষণ এবং যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। সাক্ষ্যদানকারী রোহিঙ্গারা আরও জানিয়েছেন সেখানে অনেক রোহিঙ্গা পরিবারের সবাইকে তাদের বাড়িতে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের স্কুল, মসজিদ, ক্ষেতের ফসল এবং গবাদিপশু।

মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রাখাইন রাজ্যে দমন অভিযান শুরু করার পরই এসব সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এক হামলায় তিনটি সীমান্ত পোস্টের নয়জন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর এই অভিযান শুরু হয়।

অবশ্য বরাবরই মানবতাবিরোধী অপরাধের কথা অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। কিন্তু জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলছেন, যে সাক্ষ্য প্রমাণ তারা পেয়েছেন, তাতে তাদের মনে হচ্ছে রাখাইনে যা ঘটছে তা সম্ভবত মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং এর দায়িত্ব মিয়ানমারকে নিতে হবে।

(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৭)