হাত বাড়ালেই বৃষ্টি



মাঝখানে এক হাত দূরত্ব
ওখানেই আঁকিবুঁকি কাটতে কাটতে
কখন যেন "মরুভূমি " লিখে ফেলেছি
তাই ও প্রান্তে থমকে আছে মেঘ
এ প্রান্তে লাগামছাড়া বৃষ্টি।
মেঘের গায়ে
দুধ সাদা রাজহংসীর ডানায় স্তব্ধতা
এদিকে সাজানো ল্যান্ডস্কেপ
জলের তলায়।

অথচ একবার হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দিলেই
মরুভূমিতে সোঁদা গন্ধ উঠতো।

ছুটির ঘণ্টা


আপাত অলস বাস স্ট্যান্ড
দু একটি প্রতিক্ষার সাথে আমিও,
যানবাহনের গতিবিধির ওপর থেকে
নজর ও আগ্রহ এসে পড়লো
কাক দম্পতির ওপর,
মা-টি অপত্য স্নেহে ব্যস্ত
বাবার মনযোগ একটি মরচে পড়া পেরেকে।
ওরা উড়ে যেতেই দেখি
খুব কাছে তিনটি স্কুল পোশাক
কখন নিঃশব্দে এসেছে টেরই পাইনি
অথচ ওদের মুখ ও হাতের ভঙ্গি থেকে
ঝড়ে পড়ছে অজস্র শব্দ
চোখ থেকে উপচে পড়ছে উত্তেজনা
অবাক হয়ে দেখলাম
মসৃণ নিরব কথোপকথন।
কী অবলীলায় হাওয়ার গায়ে লিখে দিচ্ছে কথা
আসছে প্রত্যুত্তর
বুঝলাম
কাছেই কোথাও
মুক ও বধির স্কুলে
ছুটির ঘন্টা...


জীবিত ব্যথা


মাংস কেটে বসে যায় ধারালো চাবুক
বহু দিনের সহবাস,
প্রত্যেকটা আঘাতকেই
নির্ভুল পড়ে নেয় অভিজ্ঞ ত্বক।
কালশিটের দাগ দেখে
আন্দাজ করা যায় গভীরতা,
উপরিতল প্রসাধনের পারদর্শিতায়
মসৃণ, উজ্জ্বল।

অন্ধকার বাড়ে শুধু অন্দরে
প্রতিদিন ক্ষয়ে যায় হৃৎপিন্ড
কত আবেগ,নিজেদের ঘুমন্ত ভেবে
আর খোলে না চোখ ,
ভীড় বাড়ায় রূপান্তরিত ফসিল
পাঁজর থেকে পুষ্টি নেয়
জীবিত ব্যথারা।


লিখিত সত্য


খাপ থেকে বেরিয়েই
একটা ধারালো ঝিলিক
আলতো করে ধরলো কবজি,
ফুটে উঠলো টুকটুকে লাল দাগ
ফোঁটায় ফোঁটায় নেমে এলো সজীব তরল
ওদের অনেক না বলা কথা
আজ লিখে দেবে সাদা মেঝেতে।
ঢালুতে গড়িয়ে যাবে আখ্যান,
জমাট বেঁধে থাকবে সাংকেতিক চিহ্ন
প্রতিটি চিহ্নতে গুচ্ছ গুচ্ছ আবেগ।

এই দুর্বোধ্য উপন্যাসের
একটি শব্দও মনগড়া নয়।


আজগুবি


এইমাত্র নদীর হাত ছেড়ে চলে গেল
দিনের শেষ আলো,
উষ্ণতা এখনো জড়িয়ে আছে
পাথরে বালিতে,
এবার কুয়াশা আর অন্ধকারের বন্ধুত্ব
পাকা হবে
নদীর কিশোরী ঢেউ গুলো
অন্ধকারে কেন যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়
কে জানে!
সবুজদের ঘুম যত গাঢ় হয়
নিশাচরদের ব্যস্ততা তত বাড়ে।
সারাদিনের অভিজ্ঞ কথাবার্তা গুলো
হলুদ পাতার গায়ে
ঝরে যাওয়ার ফর্মুলা লিখে দেয়,
একটু পরেই ক্লান্ত ইতিহাস
এসে বসবে আমার পাশে,
আমি জাদু মন্ত্রে তার সমস্ত
সাল,তারিখ সম্মোহিত করব
তারপর
আজগুবি গল্প শোনাবো ওই বৃদ্ধকে!

(আর/এস/ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৭)