রংপুর প্রতিনিধি : রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে হত্যার দায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) পাঁচ জঙ্গির ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এ মামলা থেকে একজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।

মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় এ রায় দেন রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকার। সকাল সাড়ে ৯টায় এজলাসে আসেন বিচারক। এরপর আসামিদের উপস্থিতিতে রায় পড়া শুরু করেন। দীর্ঘ সময় রায় পড়া শেষে এ রায় দেন বিচারক।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেএমবির পীরগাছার আঞ্চলিক কমান্ডার পীরগাছা উপজেলার পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়ার মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রী (২১), একই এলাকার জেএমবির সদস্য ইছাহাক আলী (২৫), বগুড়ার গাবতলী এলাকার জেএমবির সদস্য লিটন মিয়া ওরফে রফিক (২৩), গাইবান্ধার সাঘাটার হলদিয়ার চর এলাকার সাখাওয়াত হোসেন (৩২) ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাতক শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ আনছারী।

এছাড়া এ মামলা থেকে পীরগাছার কালীগঞ্জ বাজারের জেএমবির সদস্য আবু সাঈদকে (২৮) বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার এ রায়কে কেন্দ্র করে আদালত ও আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্য দিয়ে পাঁচ আসামিকে আদালতে তোলা হয়।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, জেএমবি সদস্যদের রায়ের কারণে তারা সতর্ক রয়েছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে।

সকালে আদালতের সবগুলো ফটকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা যায়। আইনজীবী ও সংবাদকর্মী ছাড়া অন্য কাউকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন না তারা।

২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে ৬৬ বছর বয়সি জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী বিশেষ পিপি রথীশ চন্দ্র ভৌমিক জানান, এ মামলায় জেএমবির আট জঙ্গির বিরুদ্ধে গত বছরের ৩ জুলাই দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন কাউনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী। ৭ জুলাই আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।

ওই বছরের ১৩ অক্টোবর কাউনিয়া আমলি আদালত-২ এর বিচারক আরিফুল ইসলাম শুনানি শেষে মামলাটি রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করেন।

পরে ২৬ অক্টোবর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হুমায়ুন কবীর বিচারের জন্য মামলাটি বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তর করেন। ১৫ নভেম্বর শুনানি শেষে সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিশেষ জজ আদালত।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭)