লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়ায় বিনোদন কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসা বানরের কামড়ে শিশুসহ ৯ জন আহত হয়েছেন। আহতদেরকে লোহাগড়া, নড়াইল সদর ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দীর্ঘ ৪ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে ওই বানরটিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যার আগে লোহাগড়া পৌর শহরের নিরিবিলি পিকনিক স্পটের চিড়িয়াখানা থেকে একটি বানর বের হয়ে শহরের মশাঘুনি, রামপুর, লক্ষীপাশা, কচুবাড়িয়া ও সিংগা এলাকায় ঢুকে পড়ে। এলাকাবাসী কোন কিছু আঁচ করার আগেই বানরটি দাবড়িয়ে মানুষজনকে কামড়াতে থাকে।

এসময় এলাকাবাসীর মাঝে বানর আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বানরের কামড়ে মশাঘুনি এলাকার শিশু নিরব (৫), সেলিম মিস্ত্রী (৪৮), ও বাকা গ্রামের ভ্যান চালক ফুল মিয়া (৬০), লক্ষীপাশা গ্রামের মিরাজ ফকির (৫০), লক্ষীপাশা গ্রামের হালিমা বেগম (৬৭), কচুবাড়িয়া গ্রামের সাগর (৪৫), রাজুপুর গ্রামের জহুর মোল্যা (৫০) গুরুতর আহত হয়। আহতদেরকে লোহাগড়া, নড়াইল সদর ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত কয়েকজন জানান, বানরটি উপজেলার রামপুর এলাকায় অবস্থিত নিরিবিলি পিকনিক স্পটের মিনি চিড়িয়াখানা থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে ডুকে পড়ে এবং দাবড়িয়ে মানুষজনকে কামড়াতে থাকে। নিরিবিলি পিকনিক স্পটের মালিক সৈয়দ মফিজুর রহমান বানরটি তার চিড়িয়াখানার নয় বলে জানান। এ দিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বানরটিকে ধরার জন্য দা, লাঠিসোঠা নিয়ে অভিযান শুরু করে। দীর্ঘ ৪ ঘন্টা অভিযান শেষে এলাকাবাসী বানরটিকে দাবড়াতে দাবড়াতে নবগঙ্গা নদীর মধ্যে নিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বানরটিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী একটি স্কুলের মাঠে বাঁশের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। মৃত বানরটিকে দেখার জন্য স্কুল মাঠে শতশত মানুষ ভিড় করে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ কাজী মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, বন্য প্রাণীকে চিকিৎসা করা আমাদের কাজ। হত্যার বিষয়ে বন বিভাগ সিদ্ধান্ত নিবে। নড়াইল জেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের পরিদর্শক রাজু আহম্মেদ জানান,বানর হত্যার বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সেলিম রেজা বানরের বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন বলে জানান। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(আরএম/এএস/মার্চ ০২, ২০১৭)