টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের মাঝুলিয়া গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে সুবর্ণা মন্ডল (২৮) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মির্জাপুর থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ কুমুদিনী হাসপাতালের মর্গ থেকে উদ্ধার করেছে। এ ঘটনার পর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে।

জানা গেছে, প্রায় ৯ বছর আগে মির্জাপুর উপজেলার মাঝুলিয়া গ্রামের পরেশের মেয়ে সুবর্ণার সঙ্গে একই উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের রাজাবাড়ি কোদালকাটা গ্রামের মঈন মন্ডলের ছেলে বিনত মন্ডলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় সুবর্ণাকে তার স্বামী, ভাসুর মানিক মন্ডল ও তার স্ত্রী নমিতা সরকার শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। এ নিয়ে গ্রামবাসী ওই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও করেন। সুবর্ণার ৫ ও ২ বছরের দু’টি মেয়ে রয়েছে।

বুধবার দিবাগত রাতে সুবর্ণাকে পিটিয়ে হত্যার পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুঁলিয়ে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে আশপাশের বাড়ির লোকজন সুবর্ণাকে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সুবর্ণার মরদেহ কুমুদিনী হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়।

এদিকে, গৃহবধূ সুবর্ণার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

সুবর্ণার বাবা পরেশ ও বড় ভাই অমল জানান, ধনাঢ্য পরিবারে বিয়ে হওয়ার পর থেকে সুবর্ণার ওপর তারা বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করতেন। তারা এ হত্যাকান্ডের বিচার চান।

গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার দেওয়ান আব্দুল কাশেম জানান, সুবর্ণার সঙ্গে মাঝে মধ্যেই তার স্বামী, ভাসুর ও জা’র সাথে ঝগড়া বিবাদ হতো। এ নিয়ে তিনিসহ এলাকাবাসী একাধিকবার সালিশ বৈঠক করেছেন।

মির্জাপুর থানার এসআই বাবুল হোসেন জানান, মৃতদেহের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া এটি হত্যা না আত্মহত্যা ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

(আরকেপি/এএস/মার্চ ০২, ২০১৭)