স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সমাধান হয়েছে, কুমিল্লায় সিটি করপোরেশনে দলীয় নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সমাধান করা হবে।
 

শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, জনগণ যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবে। কিন্তু আমরা আশা করি আমাদের দল ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে লড়বে। আর নির্বাচনে আমাদের দল থেকে ভিন্ন কোনো প্রার্থী দেয়া হয়েছে? আওয়ামী লীগ একটি বড় পরিবার। এখানে ভাইয়ে ভাইয়ে ছোটখাটো সমস্যা থাকবেই। নারায়ণগঞ্জে আমরা সমাধান করেছি, কুমিল্লায়ও সমাধান করবো।

আগামীকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে সংগঠনের পঞ্চম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কোনো প্রভাব পড়বে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচনে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কুমিল্লার মতো এত তীব্র ছিল? সেটা আমরা মিটিয়ে ফেলেছিলাম। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় দলীয় প্রার্থী (সেলিনা হায়াৎ আইভী) বিজয়ী হয়েছিলেন। নারায়ণগঞ্জে যেটা সম্ভব, কুমিল্লাতেও সেটা সম্ভব।

উল্লেখ্য, কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ বেশ কয়েকভাগে বিভক্ত থাকলেও সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও প্রবীণ নেতা আফজল খানের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিংই বেশি আলোচিত। সম্প্রতি জ্যেষ্ঠ এ দুই নেতার পক্ষ থেকেই কুসিক নির্বাচনে মনোনয়ন লড়াই হয়। এতে আফজল কন্যা আঞ্জুম সুলতানা সীমা আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন। বিগত কুসিক নির্বাচনে দলে বিভেদ থাকায় আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েও আফজল খান বিএনপির প্রার্থী সাক্কুর কাছে পরাজিত হন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণ থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির অংশ গ্রহণের সুযোগ সংবিধানে আছে কি না? সংবিধানে যদি না থাকে তাহলে আমরা খী করে সে সুযোগ দেব।

কাদের বলেন, দলের কোনো শাখার কেউ যদি অপরাধী হন, শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কাজ করেন তাহলে তাকে সরাসরি বহিষ্কার করা যাবে না। বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করতে হবে এবং সেই সুপরিশ আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত হবে। এছাড়া কোনো কমিটিও হুট করে ভেঙে দেয়া যাবে না। এ সুপরিশও কেন্দ্রীয় কমিটির সংশ্লিষ্ট যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে রিপোর্ট জমা দেবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত এ নেতারা রিপোর্ট কেন্দ্রীয় কমিটিতে উত্থাপন করবে।

খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেবে না- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সময় এবং স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। তেমনি সংবিধান ও নির্বাচন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না। কারো জন্য ৫ জানুয়ারি নির্বাচন যেমন থেমে থাকেনি। এবারও যদি কেউ নির্বাচনে না আসেন তাহলে নির্বাচন থেমে থাকবে না। তবে না আসার কোনো কারণ নেই। নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বিএনপি নেবে বলে আমার মনে হয় না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, এ বছরের মধ্যে আমরা আমাদের অসমাপ্ত সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন এবং দলের নিম্ন পর্যায়ের যেসব কমিটি এখনও পূর্ণাঙ্গ হয়নি সেগুলো সমাপ্ত করবো।

মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্বে নবীন-প্রবীণের সমন্বয় হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, দলে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বিধান রয়েছে। সেটা আমারা ক্রমান্বয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সাম্প্রতিককালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নারী মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়াও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং সুনামগঞ্জ-২ আসনের উপ-নির্বাচনেও নারীদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সদস্য এসএম কামাল হোসেন, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুন্নেছা মোশাররফ, সাধারণ সম্পাদক পিনু খান, সহ-সভাপতি সাফিয়া বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা বেগম প্রমুখ।

(ওএস/এএস/মার্চ ০৩, ২০১৭)