প্রবীর সিকদার


সশ্রদ্ধ সালাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

অনেক বছর ধরেই হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে খবর, বিএনপি নেতা বরকত উল্লাহ বুলু বহুল বিতর্কিত ও নিন্দিত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি গ্রীন ডেল্টা হাউজিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের নেপথ্যের মালিক। সেই গ্রীন ডেল্টা আমার মতো কয়েক শত গ্রাহকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে এখন ভিন্ন নামে অফিস খুলে ফের প্রতারণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ দেখার নেই! আপনি হয়তো বলবেন, বুঝে শুনে বিনিয়োগ না করলে এমনই হয়!

আমরা আর কতোটা বুঝবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! সরকারি ট্রেড লাইসেন্স আছে গ্রীন ডেল্টার। কোম্পানি আইনে নিবন্ধিত কোম্পানি। আছে রাজউকের অনুমোদন। জমির কাগজ ঠিক আছে। আছে নকশার অনুমোদন। রিহ্যাব সদস্য তারা। আছে রেজিস্টার্ড অফিস। একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য আমরা আর কি কি দেখবো বা যাচাই করবো! আপনার সহকর্মীরা হয়তো বলবেন, ওরা প্রতারক; ওদের সাথে কেন লেনদেন করা হল! হয়তো এটি আমাদের একটি ভুল। তাহলে ওই প্রতারক চক্রকে সব সরকারি অনুমোদন দেয় কারা? এটা তো দেয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্তারা। আমি দ্বিধাহীন হীন চিত্তে বলবো, সরকার কিংবা সরকার প্রধান হিসেবে আমি ওই প্রতারক কোম্পানির দায় এড়াতে পারেন না। আমরা অন্তত দুই বছর আগে গণভবনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ওই কোম্পানির প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে আপনার সমীপে লিখিত একটি আবেদন করেছিলাম। আমি বা আমরা আশা করেছিলাম, বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের পাশে দাঁড়াবেনই। কিন্তু সেটা হয়নি। আমি বা আমরা পরে ধারণা করেছি, ওই প্রতারক চক্রের লম্বা হাত আমাদের অন্তরের গভীর যন্ত্রনামাখা ওই আবেদন পত্রটি আপনার টেবিল পর্যন্ত যেতেই দেয়নি!

বিএনপি-জামায়াত ঘরানার ওই প্রতারক চক্র সদম্ভে বলে বেড়ায়, তাদের সাথে এখন প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতারা আছেন। কেউ নাকি তাদের কিছুই করতে পারবে না! বাস্তবেও দেখা যাচ্ছে তাই! প্রতারক গ্রীন ডেল্টা চক্র 'গোল্ড স্যান্ডস হোটেলস এন্ড রিসোর্ট লিমিটেড' নামে নতুন করে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা মহাখালী নিউ ডিওএইচএস-এ।[ প্লট নম্বর বি ১১১, লেভেল ৩, মসজিদ রোড, নিউ ডিওএইচএস, মহাখালী, ঢাকা] নতুন এই নামে প্রতারক চক্র গত ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলায় স্টলও নিয়েছিল। এ ব্যাপারে অন্তত একজন প্রতারিত গ্রাহক ঢাকার কাফরুল থানায় মামলা করেছেন। কাফরুল থানা পুলিশ আন্তরিকভাবে ওই প্রতারক চক্রকে ধরতে বানিজ্য মেলা ও মহাখালীর অফিসে একাধিকবার হানাও দিয়েছিলেন। সেখানে প্রতারকদের কাউকে পাওয়া যায়নি। শোনা যাচ্ছে, নতুন তরুণতরুণীদের দিয়ে তারা অফিস ও প্রতারণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফোনে ফোনে নির্দেশনা দিয়ে অফিস ও ব্যবসা চালাচ্ছেন তারা। মাঝে মধ্যে তারা অফিসে আসেন। আর ফোনে ফোনেই বড় বড় কর্তার কথা বলে বলে থানা পুলিশকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন!

এবার বুঝুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি নেতা বরকত উল্লাহ বুলু কিংবা তার সাগরেদরা আপনার নেতৃত্বের আওয়ামীলীগের এই আমলেও কতো ক্ষমতাধর ! এখনো আমার বা আমাদের আস্থা আপনার উপরেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনি নিশ্চয়ই সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে গ্রীন ডেল্টার দুর্বৃত্ত-প্রতারক চক্রের ভয়ঙ্কর থাবা থেকে আমাকে, আমাদেরকে বাঁচাবেন।