পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : পায়খানা ও গবাদী পশুর খামারের দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে নাকে ওড়না চেপে ক্লাস করছে ছাত্রীরা। কিছুক্ষণ পরপর ছাত্রীরা শ্রেণী কক্ষের বাহিরে গিয়ে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। ফলে তারা ক্লাসে মনোযোগী হতে পারছে না। ক্লাস শিক্ষকও বেকায়দায় পড়ছেন। এ ব্যাপারে ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। দুর্বিসহ চিত্রটি পীরগঞ্জের মাদারগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ১৯৭৩ সালে উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ বন্দরে ‘মাদারগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার পর ওই এলাকায় নারী শিক্ষার বেশ অগ্রগতি হয়েছে। বিদ্যালয়টি গত শীতকালীন বন্ধের সময় বিদ্যালয়ের অফিস রুম ও শ্রেণী কক্ষের জানালা ঘেঁষে উত্তর পার্শ্বে পায়খানা ও গরুর খামার দিয়েছেন ওই জমির মালিক মাদারগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ দবির উদ্দিন শেখ ও তার ভাগ্নী আনিছা বেগম। ফলে জানালা দিয়ে শ্রেণী কক্ষ ও অফিসে গবাদী পশুর বর্জ্য-মলমূত্র এবং পায়খানার দুর্গন্ধ আসছে। এমনকি জানালা বন্ধ করেও দুর্গন্ধ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে শিক্ষক-ছাত্রীরা ক্লাসে টিকতেই পারছে না। ছাত্রী উপস্থিতিও কমে গেছে। বিদ্যালয়টির অফিস রুমসহ ১০টি শ্রেণী কক্ষের মধ্যে প্রধান শিক্ষক-সহকারী শিক্ষকদের কক্ষ, ৭ম, ৮ম, ১০ম শ্রেনী, কম্পিউটার ল্যাবসহ ৫ টি কক্ষে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।

প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন চৌধুরী জানান, বিদ্যালয়ের পাশের জমিটির দু’জন মালিককে বরাবরই অনুরোধ করলেও তারা পায়খানা ও গরুর খামার প্রতিষ্ঠা করায় আমরা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। ক্লাস শিক্ষক নাকে রুমাল এবং ছাত্রীরা ওড়না চেপে অতিকষ্টে ক্লাস করছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরনে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সদস্য, স্থানীয় গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ এমনকি চেয়ারম্যানকে দিয়ে খামার মালিককে একাধিকবার অনুরোধ করেও সমাধান করতে পারিনি। ফলে বাধ্য হয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। দুর্গন্ধে অতিষ্ট ছাত্রী ছাদিয়া, আইরিন, স্বপ্না, আঁখি, মুসরাত জানায়, স্যার যতক্ষণ পাঠদান করান ততক্ষণ অতিকষ্টে নাকে ওড়না চেপে ক্লাস করি। তাও আবার ৫/৭ মিনিট পর পর বাহিরে গিয়ে নিঃশ্বাস নিয়ে ক্লাসে ফিরতে হয়। এভাবে লেখাপড়া করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

খামারের মালিক আনিছা বেগম বলেন, আমি তো আমার জায়গায় খামার করেছি। অপর মালিক অধ্যক্ষ দবির উদ্দিন শেখ জানান, আমি আমার জায়গায় অবকাঠামো নির্মান করেছি। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান এস. এম. ফারুক আহম্মেদ বলেন, আমি বিষয়টি জানার পরই জমির মালিক দবির উদ্দিনকে খামার করতে নিষেধ করলেও তিনি শোনেননি। ইউএনও কমল কুমার ঘোষ বলেন, আমি লিখিতভাবে অভিযোগ পেয়েছি। এখন তদন্ত করা হবে।

(জিকেবি/এএস/মার্চ ০৬, ২০১৭)