নওগাঁ প্রতিনিধি : সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেছেন, বর্তমান সরকার সকল ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সাংস্কৃতিক অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

আমরা বিশ্বাস করি দেশের সকল মানুষের একটিই পরিচয় আমরা বাঙালী। ১৯৭১ সালে সকল ধর্মীয় বিভেদ, সাম্প্রদায়িকতা, ক্ষুদ্র জাতি স্বার্থ ভুলে গিয়ে দেশের মুক্তির জন্য জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাই বর্তমানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার সকলের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলা সদরে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক একাডেমী’র ভবন নির্মান কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেন।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক ড. মোঃ আমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় সংসদের হুইপ মোঃ শহীদুজ্জামান সরকার বাবলু এমপি, পুলিশ সুপার মোঃ মোজাম্মেল হক বিপিএম, পিপিএম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বাকীউল্লাহ, নওগাঁ পৌর আ’লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণ, পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামলীগের সভাপতি ইছাহাক হোসেন, সাধারন সম্পাদক আব্দুল গাফ্ফার, নজিপুর পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম চৌধূরী, নজিপুর পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিল্টন, আদিবাসী নেতা নরেন পাহান, যতিন টপ্পসহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, দেশের যে অঞ্চলে যা কিছু ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে সেই সব চাহিদার ওপর নির্ভর করে এব্ং তা চর্চ্চার জন্য প্রয়োজনীয় একাডেমী গড়ে তোলা হচ্ছে। কারন আমরা চাই বাংলাদেশের মুল সংস্কৃতির পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের যে ঐতিহ্য আছে, যে সংস্কৃতি আছে, তা বিকশিত হোক। আর সে উদ্দেশ্যেই সরকার কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রামু, মানিকগঞ্জ, দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি ও বিরিশিরিসহ অন্যান্য জেলায় একই ধরনের একাডেমী নির্মানের কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে এই ছোট ছোট প্রচেষ্টা একদিন বাংলাদেশে সুষ্ঠু সুন্দর ও চমৎকার সাংস্কৃতিক পরিবেশের সৃষ্টি হবে। মোট ৫ কোটি ৬০ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে গণপূর্ত বিভ্গা পত্নীতলা উপজেলা সদরে এই ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক একাডেমী’ নির্মান করছে।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে সংস্কৃতিমন্ত্রী নওগাঁ জেলা সদরে করোনেশন হল সোসাইটি মঞ্চে ৬ দিনব্যাপী নাট্যোৎসবের উদ্বোধন করেন। স্থানীয় সামাজিক সংগঠন “বন্ধু’ ৮৪” এই নাট্যোৎসবের আয়োজন করে। ‘বন্ধু ৮৪’র আহবায়ক রবিউল করিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোঃ আমিনুর রহমান এবং পুলিশ সুপার মোঃ মোজাম্মেল হক বিপিএম পিপিএম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘বন্ধু ৮৪’র সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান পলাশ। নাট্যোৎসবের উদ্বোধনী দিনে দেশের প্রখ্যাত নাট্য সংগঠন ঢাকা আরন্যক মামুনুর রশিদের “রাঢ়াঙ” নাটকটি মঞ্চস্থ করে।

এছাড়াও উৎসবে পর্যায়ক্রমে ঢাকা থিয়েটারের “ পঞ্চনারী আখ্যান”, বগুড়ার চৌপাশ নাট্যাঞ্চলের “ এখন দুঃসময়, ঢাকা প্রাচ্যনাট্যের “সার্কাস সার্কাস” ঢাকা থিয়েটার আর্ট ইউনিটের “ আমিনা সুন্দরী” এবং নওগাঁ করোনেশন হল সোসাইটির “ শিখন্ডি কথা” মঞ্চায়িত হবে।

(বিএম/এএস/মার্চ ০৮, ২০১৭)