সিলেট প্রতিনিধি : সিলেটের আলোচিত শিল্পপতি রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

পলাতক অবস্থায় প্রতারণার মাধ্যমে স্থানীয় দৈনিক ‘সিলেটের ডাক’ পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় তাদের বিরুদ্ধে এ রায় দেয়া হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিটে সিলেটের মূখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

মাত্র চার কার্যদিবস শেষে আলোচিত এই মামলার রায় এলো আদালত থেকে। এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন একই আদালত।

এদিকে, রাগীব আলীর বিরুদ্ধে রায় শোনার জন্য সকাল থেকে আদালত চত্বরে শতাধিক মানুষ ভিড় করেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওই আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান বলেন, দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার সম্পাদকণ্ডলীর সভাপতি রাগীব আলী ও তার ছেলে পত্রিকার সম্পাদক আব্দুল হাইকে ১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েয়েছেন। আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।

মামলার বাদী গিয়াস উদ্দিন তালুকদার বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। এতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলো।

গত ২ মার্চ আলোচিত এই মামলায় মোট ৩ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ৬ মার্চ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ ৯ মার্চ রায়ের তারিখ ধার্য করেন আদালত। এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই মামলার অভিযোগ গঠন করেছিলেন আদালত।

সিলেটের হাজার কোটি টাকার দেবোত্তোর সম্পত্তি তারাপুর চা বাগান দখলের অভিযোগে দুটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গত বছরের ১০ আগস্ট রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই ভারতে পালিয়ে যান। সেই সময় রাগীব আলী সিলেটের ডাক পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এবং তার ছেলে আবদুল হাই সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। পরে আব্দুল হাইকে সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হলেও রাগীব আলী এখনো স্বপদে বহাল আছেন।

আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাগীব আলী ও আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে মামলা করেন সিলেট নগরের উপশহরের বাসিন্দা ও ছাতক প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গিয়াস উদ্দিন তালুকদার।

পলাতক অবস্থায় সম্পাদনাজনিত প্রতারণার অভিযোগে রাগীব আলীর ৫৮ বছর ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের ২৯ বছরের কারাদণ্ডের আবেদন করেন মামলার বাদী।

আদালত ওই দিন দরখাস্ত মামলাটি আমলে নিয়ে দণ্ডবিধির ৪১৭ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দেন। তবে সমন পাওয়ার পর আসামিরা হাজির হয়ে জবাব না দেওয়ায় পরের মাসে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০৯, ২০১৭)