শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরে বিল্লাল হোসেন (১২) নামে এক কিশোরকে হত্যার দায়ে অপর তিন কিশোরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো সদর উপজেলার শেরিঘাট এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে ছানুয়ার হোসেন ওরফে মান্নান (১৫), একই এলাকার শাহাদত হোসেনের ছেলে বিশু মিয়া (১৪) ও শ্রীবরদী উপজেলার গিলাগাছা গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর ছেলে নুর হোসেন (১৬)।

রায়ে একই সঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আসামি ছানোয়ার হোসেন পলাতক।

এনিয়ে চারদিনের ব্যবধানে একই আদালতে তিন মামলায় ছয়জনের যাবজ্জীবন ও একজনের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হলো।

আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন ঠাণ্ডু জানান, শেরপুর শহরের নবীনগর এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে কিশোর বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে আসামি মান্নান, বিশু মিয়া ও নুর হোসেনের একটি চুরির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। ওই দ্বন্দ্বের জেরে ২০১১ সালের ২৩ মে রাতে শহরের শেরিঘাট ব্রিজের নিচে ডেকে নিয়ে তারা বিল্লালকে মরা গরুর হাড় দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

এরপর হাত-পা বেঁধে গুম করার উদ্দেশ্যে একটি চোরাই ট্রাঙ্কের ভেতর বিল্লালের মরদেহ ঢুকিয়ে ট্রাঙ্কটি নদীতে ভাসিয়ে দেয়। পরদিন সকালে স্থানীয় ভাটারাঘাট ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন নদীতে জেলেদের জালে আটকা পড়ে ট্রাঙ্কটি। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় একইদিন সদর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্তকালে তিন আসামিই গ্রেফতার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান একই বছরের ৩১ আগস্ট ওই তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলাটির দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় দেন আলাদত। রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, দণ্ডবিধির ১৮৬০ এর ৩০০ ধারায় ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আসামিদের বয়স বিবেচনায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হলো।

এদিকে অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন ঠাণ্ডু রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান জানান, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

(ওএস/এএস/মার্চ ০৯, ২০১৭)