লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। লক্ষ্মীপুর জেলা স্টেডিয়ামে আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জেলার ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের ফলক উম্মোচন ও ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার কথা রয়েছে।

দীর্ঘদিন পর লক্ষ্মীপুরে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে উজ্জীবিত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে লক্ষ্মীপুর এখন বিরাজ করেছে সাজসাজ রব। আওয়ামীলীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জনসভাস্থল, দালাল বাজার থেকে প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াত পথে অসংখ্য তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন টানানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো প্রায় ২০ বছর পর লক্ষ্মীপুর সফরে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার দুপুরে তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে লক্ষ্মীপুরের দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজে হেলিপ্যাডে অবতরণ করবেন তিনি। সেখান থেকে সার্কিট হাউজে উপস্থিত হয়ে নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতি শেষে জনসভায় অংশ নেবেন।

জনসভাকে ঘিরে এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এ সফরে প্রধানমন্ত্রী রামগতি ও কমলনগর মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প (১ম পর্যায়), চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ ভবন, সদর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম, কমলনগর উপজেলা পরিষদ ভবন, কমলনগর উপজেলা অডিটোরিয়াম, লক্ষ্মীপুর পৌর আইডিয়াল কলেজ ভবন, মোহাম্মদিয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র নির্মাণ (৩য় ও ৪র্থ), কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও প্রাণী হাসপাতাল উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করবেন।

এছাড়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, প্রশাসনিক ভবন ও নাবিক নিবাস-কোস্টগার্ড মজু চৌধুরীর হাট, পুলিশ অফিসার্স মেস লক্ষ্মীপুর সদর পুলিশ ফাঁড়ি, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবন, লক্ষ্মীপুর খাদ্যগুদামে ৫০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন গুদাম নির্মাণ, রামগঞ্জ উপজেলায় ১৩২/৩৩ কেবি গ্রিড উপ-কেন্দ্র নির্মাণ, পিয়ারাপুর সেতু, চেউয়াখালী সেতু, মজু চৌধুরীর হাটে নৌ বন্দর, লক্ষ্মীপুর পৌর আধুনিক বিপণী বিতান, রামগঞ্জে আনসার ও ভিডিপি ব্যাটালিয়ন সদর দফতর কমপ্লেক্স, লক্ষ্মীপুর পৌর আজিম শাহ (রা.) হকার্স মার্কেট, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ একাডেমিক ভবন কাম পরীক্ষা কেন্দ্র, লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইন্স মহিলা ব্যারাক নির্মাণ, লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ সড়কে পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ, রায়পুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ও কমলনগর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন জানান, প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্মীপুর আগমন উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পর দলীয় নেত্রীকে কাছে পেতে দলীয় নেতাকর্মী উদগ্রীব হয়ে আছে। এছাড়া প্রধান মন্ত্রীর সফরকে ঘিরে দলের সাংগঠনিক তৎপরতা নিবিড় ভাবে তদারকি করছেন দলের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম) এনামুল হক শামীম বলেও জানা গেছে ।

লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু বলেন, প্রায় ১৯৯৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থাকা কালে লক্ষ্মীপুর সফরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। এছাড়া ২০০১ সালে রামগঞ্জে সংক্ষিপ্ত নির্বাচনী পথ সভায় অংশ নেন তিনি। এখন নেত্রীর আগমনে দলীয় নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দ বিরাজ করছে। জনসভায় লক্ষ্মীপুরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী লোক সমাগম হবে বলে আশা করছেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রী আগমন উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও রয়েছে।

(এমআরএস/এএস/মার্চ ১৩, ২০১৭)