নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের নলডাঙ্গা, বড়াইড়গ্রাম, গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলায় ঝড়ো হাওয়া ও তুমুল শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে আমের মুকুল, পেঁয়াজ, পেঁয়াজ বীজ, গম, রসুন, মসুর, তরমুজসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শনিবার বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে শুরু করে থেমে থেমে বিকাল সোয়া চারটা পর্যন্ত এই ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি হয়।

মাধনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন দেওয়ান জানান, বিকাল তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার মধ্যে উত্তর-পশ্চিম কর্ণারে কালো মেঘ জমে উঠে এবং বিদ্যুৎ চমকাতে থাকে। এক পর্যায়ে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর শুরু হয় তুমুল শিলাবৃষ্টি। প্রায় আধাঘণ্টা এই শিলাবৃষ্টি হয়। এতে কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একই কথা জানালেন খাজুরা ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান। তিনি জানান, ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টি নিরুপনে কৃষি বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। বৃষ্টির পরপরই কৃষকরা মাঠে ছুটছেন।

পাটুল গ্রামের কৃষক আকতার হোসেন জানান, শিলাবৃষ্টিতে তার দুই বিঘা জমির পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে। খোলাবাড়িয়া গ্রামের আশরাফুল ইসলাম জানান, শিলাবৃষ্টির কারণে হালতিবিলের মাঝে চাষকৃত পেঁয়াজ কদম ও গমের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে শিলাবৃষ্টি নলডাঙ্গা উপজেলা অতিক্রম করে সিংড়া, গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার বেশকিছু এলাকায় শুরু হয়। প্রায় পনের থেকে বিশ মিনিট স্থায়ী হয় শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া। এতে ওই এলাকায় রসুন, পিয়াজ ও তরমুজ, বাঙ্গী,খিরার সহ বিভিন্ন ফসলের বেশকিছু ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।

সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ গ্রামের কৃষক হুজুর আলী ও তাছের আলী জানান, তাদের এলাকায় পেঁয়াজ,গম, আমের মুকুল ছাড়াও বোরো ধানের থরের ক্ষতি হয়েছে। বড়াইগ্রাম উপজেলার চড়ইকুল গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, জেলার সবচেয়ে বেশি রসুন উৎপাদন হয় বড়াগ্রাম ও গুরুদাসপুর উপজেলায়। আর মাত্র কিছুদিন পরেই এই এলাকার রসুন উত্তোলন শুরু হবে। শিলাবৃষ্টি হওয়ার কারণে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। একই কথা জানালেন আরো অনেকে।

গুরুদাসপুরের শিধুলী গ্রামের কৃষক ফরহাদ হোসেন জানান, শিলা বৃষ্টিতে তাদের এলাকার রসুন, তরমুজ, বাঙ্গী, খিরার ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ আর সার্থী ফসল তরমুজের বেশি ক্ষতি হয়েছে।

নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, এই শিলাবৃষ্টিতে মাঠে ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমান নির্ণয় করা যায়নি। শিলাবৃষ্টির খবর পেয়ে মাঠে কৃষি কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। তারা খোঁজ খবর নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।

(এলএইচ/এএস/মার্চ ১৮, ২০১৭)