বান্দরবান প্রতিনিধি : রবিবার দুপুরে ছায়ানীড়ে বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায় নিহতের নিবাসস্থলসহ বাইশারী এলাকা পরিদর্শন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে ইউপি অফিসে মতবিনিময় করেন পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাশরুফ, নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ এইচ.এম তৌহিদ কবির, ডি.আই.ওয়ান (পরিদর্শক) বাঁচা মিয়া, বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আবু মুসা, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম, সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল হক, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাহাদুরসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার বলেন, নিহত জোবাইরা ও কামালের পিতাকে লাশ গ্রহন ও সনাক্তকরণের জন্য চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানা পুলিশের নিকট পাঠানো হয়েছে এবং বাইশারীতে যেন এ ধরনের জঙ্গি সম্পৃক্ততার সাথে কেউ জড়িত হতে না পারে সেজন্য পুলিশকে সহায়তার পাশাপাশি এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের নিয়ে জঙ্গীদের সহযোগীতাকারীদের চিহ্নিত করার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন আজ থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হবে।

২০১৬ সালে চার মাসের ব্যবধানে বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যা, আওয়ামীলীগ নেতা মংশৈলু মার্মা হত্যা, বাইশারী বাজারে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরনের ঘটনায় আটক ও নিহত জঙ্গীরা জড়িত কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, জঙ্গীরা এই ঘটনার সাথে জড়িত কিনা বলা যাচ্ছে না। তবে সব বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর জানা যাবে তারা জড়িত ছিল কিনা।

দুপুরে নিহত কামালের বাড়ীতে গেলে তার মা ওয়াছ খাতুন জানান, তার ছেলে সহজ সরল ছিল। কারো সাথে ঘনিষ্ট ভাবে মেলা মেশা করতো না। কখনো নামাজ বাদ দিতো না। জোবাইরা ইয়াছমিনকে বিয়ে করে ঘরে আনার পর তার স্ত্রীকে কারো সামনে যেতে দিতো না, এমন কি ১২ বছরের একটি ছেলের সাথেও কথা বলতে দিতো না। সব সময় ঘরের ভীতরে অবস্থান করতো জোবাইরা ইয়াছমিন। গত ৮ মাস আগে ছেলে ইমাম হোসেনকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে চট্টগ্রামে নিয়ে যায় তার স্বামী কামাল। সেই থেকে তাদের সাথে কামাল ও তার স্ত্রীর কোন ধরনের যোগাযোগ হয়নি বলে দাবী করেন এই বৃদ্ধ মহিলা।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে গুলি ও বোমা বিস্ফোরণে ৪ জঙ্গীসহ এক শিশু নিহত হয়। নিহত ৫ জনের মধ্যে ৩ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত জঙ্গী কামাল ও তার স্ত্রী জোবাইরা ইয়াছমিন ও তাদের একমাত্র শিশু পুত্র ইমাম হোসেন। তারা সকলেই বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাধীন বাইশারী ইউনিয়নের যৌথ খামার পাড়া এলাকার বাসিন্দা।

(এএফবি/এএস/মার্চ ২০, ২০১৭)