চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জরিনা রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক শওকত আলীর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

সোমবার দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে বিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ভাঙ্গুড়া বাজারে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে। বিক্ষোভ শেষে উত্তেজিত শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক শওকত আলীকে লাঞ্ছিত করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়ে তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত ওয়াশ রুমের ব্যবস্থা না থাকা, নিষিদ্ধ গাইড বই পড়াতে বাধ্য করা, কোচিং বাণিজ্য, রেজিস্ট্রেশন, অতিরিক্ত পরীক্ষা ফি আদায় এবং উপবৃত্তি, স্কুলের অনুদান আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছে প্রধান শিক্ষক শওকত আলী। এসব কারণে আমরা বিক্ষোভ করতে ও স্কুলে তালা দিতে বাধ্য হই।

শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানান, ‘প্রধান শিক্ষক শওকত আলী বিগত কয়েক বছর ধরে তার নিকটতম ব্যক্তিদের নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি করে তৎকালীন সভাপতির যোগসাজসে বিদ্যালয়ের আয়কৃত অর্থ আত্মসাত করে আসছে। ২০১৩ সালে এক সরকারি নিরীক্ষায় তিনি ১০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তার ভেতন-ভাতা বন্ধের নির্দেশও এসেছে। কিন্তু তিনি হাইকোর্টে একাধিক মামলা করে এখনো বেতন-ভাতা ভোগ করছেন। প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি ও মামলা পরিচালনায় বিদ্যালয়ের অর্থ ব্যায় করার কারণে বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুল আলম ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন-বিলে স্বাক্ষর করেননি। ফলে আমরা বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।

প্রধান শিক্ষক নিজের অপকর্ম আড়াল করতে নিজের দায় স্কুলের অন্য শিক্ষকের ওপর চাপায় এবং তাকে শোকজ করে। এছাড়া তার স্ত্রী সহকারী লাইব্রেরিয়ান আঞ্জুয়ারা বেগম প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত কাজ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের দিয়ে করিয়ে নেন। এ কারণে আমরা তাকে স্কুল থেকে বের করে তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি।’

অনিয়মের বিষয় অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক শওকত আলী বলেন, সাবেক সভাপতি বাকি বিল্লাহ মামলা দায়ের করার কারণে এটা হয়েছে। এতে আমার করার কিছু ছিলনা। আমাকে মিথ্যাভাবে জড়ানো হচ্ছে।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম শাজাহান আলী জানান, প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির কারণে শিক্ষকেরা বেতন না পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এসএইচএম/এএস/মার্চ ২০, ২০১৭)