আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নদী রক্ষার তাগিদ থেকে ভারতের অন্যতম নদী গঙ্গা ও যমুনাকে মানুষের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।

 

গত সোমবার উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট এ দুই নদীকে মানবসত্তার অধিকারী বলে উল্লেখ করেন। হাইকোর্ট বলেন, গঙ্গা নদী জীবন্ত সত্ত্বার মর্যাদা পাবে। একই মর্যাদা পাবে যমুনা নদীও। দুই নদীকে মানুষ হিসেবেই বিবেচনা করা হবে।

গঙ্গা নদীর দূষণ রোধে জনস্বার্থ মামলায় সোমবার বিচারপতি রাজিব শর্মা ও বিচারপতি অলোক সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন। দুই নদীকে মানুষের মর্যাদা দিয়ে তাদের অধিকার রক্ষায় অভিভাবকও ঠিক করে দিয়েছেন আদালত।

গঙ্গা ও যমুনার অভিভাবকরা হলেন- উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিব ও অ্যাটর্নি জেনারেল। আদালত বলেছেন, নদীর স্বাস্থ্য ও সার্বিক ভালো-মন্দের খেয়াল রাখবেন এই কর্মকর্তারা।

আদালতের এ রায়ের ফলে আড়াই হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ গঙ্গা নদী এখন থেকে মানুষের মতো মৌলিক অধিকার পাবে। উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের অধীন গ্রিন ট্রাইব্যুনাল বলেন, ফ্যামিলি ট্রাস্ট বা যেকোনো সংস্থার যেমন আইনি অধিকার আছে, এক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি কিছু হবে না।

নদীর মানুষের মর্যাদা পাওয়ার দিক থেকে এটি দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত। প্রায় এক সপ্তাহ আগে নিউজিল্যান্ডের সংসদে আইন পাস করে হোয়াংগানুই নদীকে মানুষের মর্যাদা দেয়া হয়। ওই নদীর দৈর্ঘ্য ১৪৫ কিলোমিটার।

‘নমামি গঙ্গা’নামের একটি প্রকল্পের প্রধানকে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, গঙ্গা পরিচ্ছন্ন ও গতিমান রাখার কাজ করবেন তারা। এর ফলে দূষণ রোধ করে গঙ্গাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করেন আদালত।

গত বছরের ডিসেম্বর মাসে গঙ্গার দূষণ রোধের দাবিতে জনস্বার্থে মামলা করেন আইনজীবী ললিত মিগলানি ও আইনজীবী এমসি পান্থ। মামলায় অভিযোগ করা হয়, সরকারি উদ্যোগ থাকলেও তা বাস্তবায়নের অভাবে গঙ্গা ও যমুনার দূষণ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে গঙ্গা ব্যবস্থাপনা পরিষদ গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ পরিষদ গঙ্গার দূষণকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান তৈরি করবে।

ভারতের কেন্দ্রীয় পানিসম্পদমন্ত্রী উমা ভারতী আদালতের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা গঙ্গাকে সব সময় মা হিসেবে গণ্য করে এসেছি। মা তো জীবন্ত মানুষই। এই মতাদর্শে আদালত শুধু সিলমোহর দিয়েছেন।

অপরদিকে, পরিবেশ আন্দোলনকারীরা আদালতের এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এখন থেকে নদীদূষণ কমবে। দূষণকারীরা কঠোর শাস্তির ভয়ে থাকবেন। তবে আইন বাস্তবায়নে সক্রিয় থাকতে হবে প্রশাসনকে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২২, ২০১৭)