মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার জেলা শহরের পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের বড়হাট এলাকার বাড়িটিকে ঘিরে এখন স্থানীয় এলাকাবাসির মধ্যে কাজ করছে গভীর আতংক আর উৎকণ্ঠা। গত দুইদিন যাবত তারা কাটাচ্ছেন নির্ঘুম রাত। আতংকের মধ্যে রয়েছেন সারাক্ষণ।

এদিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা বাড়িটিকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছেন বুধবার (২৯ মার্চ) ভোরবেলা থেকে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন বেলা সাড়ে ১টার দিকে বড়হাট এলাকার গ্যাস অফিস সড়ক দিয়ে জঙ্গিদের অবস্থান করা বাড়ির পেছনের রাস্তায় স্থানীয় পৌর মেয়র ফজলুর রহমানের বাড়ির দিকে প্রবেশ করে দেখা যায়, মেয়রের বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরত্বে জঙ্গিদের সেই বাড়িটির অবস্থান।

বাড়ির পেছন দিক থেকে দেখা যায় দোতলার গ্লাসটি ভাঙ্গা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন পলিশের গুলির আঘাতেই গ্লাসটি ভেঙ্গে যায়। পুলিশ জঙ্গিদের অবস্থান করা বাড়িটিকে কেন্দ্র করে তার চতুরদিকে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে রেখেছে এবং কাউকেই সেখানে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।

জানা যায়, ২৯ মার্চ বুধবার বাড়িতে অবস্থান করা জঙ্গিরা আইনশৃংখলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে একাধিকবার গ্রেনেড ছুড়ে। ছুড়ে মারা গ্রেনেড গিয়ে বিস্ফোরিত হয়ে জমিনে পরে যায়, তবে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুঁড়ে পাল্টা জবাব দেয়। তখন আইন-শৃংখলাবাহিনীর গুলিতে জঙ্গিদের বাড়ির পেছনের জানালার কাচগুলো ভেঙ্গে যায়। তবে পুলিশের অতিরিক্ত কড়াকড়ি ও বাঁধার কারণে ওই বাসা সম্পর্কে স্থানীয়দের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

মেয়রের বাড়িতে অবস্থান করা স্থানীয়দের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে তখন সেখানে দায়িত্বরত পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ অন্য সদস্যরা ক্ষিপ্ত উঠে এবং স্থানীয়দের নিষেধ করেন সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলতে। এক পর্যায়ে তিনি স্থানীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা যার যার ঘরে চলে যান। কোন অবস্থাতেই বাহিরে বের হবেননা,সন্ধ্যার দিকে সেনাবাহিনী নামতে পারে। তার আগেই এক কিলোমিটার দূরত্বে আপনাদের প্রত্যেককে নিরাপত্তার স্বার্থে নিজ নিজ বাসা ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে হবে।” তখন সেখানে অবস্থান করা সংবাদকর্মীদের সেখান থেকে দ্রুত সরে যেতে নির্দেশ দেন তিনি।

এদিকে, স্থায়ীয় ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ জানান, এই বাড়িটি নির্জন এলাকাতে হওয়ায় ঐবাড়িতে অবস্থান করা লোকদের সম্পর্কে স্থানীয়দের কোনো ধারণা নেই এবং ঐরাস্তা দিয়ে স্থানীয়রা যাতায়াত্ও করে না।

তিনি আরো জানান, এই বাড়িকে কেন্দ্র করে তারাও অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন। গ্রেডেট বা গোলাগুলির আতংক তাদের তাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সারাক্ষণ। সবশেষে জানা যায় সন্ধ্যার আগেই বড়হাট এলাকার এ বাড়িটিতে আইন-শৃংখলাবাহিনী অভিযান চালাতে পারে ।


(একে/এসপি/মার্চ ৩০, ২০১৭)