টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইল আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে জেলার প্রতিটি সড়কের যান চলাচল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হঠাৎ করেই বন্ধ রয়েছে। এতে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। মালিকরা বলছেন, এটা কোন ধর্মঘট নয়, চালকরা হঠাৎই যাবাহন চলানো বন্ধ করে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭ এর খসড়া মন্ত্রীসভায় অনুমোদন হওয়াসহ আইনের অস্পষ্টতা থাকার অভিযোগে হঠাৎ এ ধর্মঘট আহ্বান করা হয়।

জেলা বাস-কোচ-মিনিবাস কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল মালিক সমিতিতে হাজারেরও কিছু বেশি গাড়ি রয়েছে। তবে প্রতিদিন গড়ে ৭০০-৮০০ গাড়ি রাজধানী ঢাকাসহ জেলার বিভিন্ন সড়কে চলাচল করে।

সরেজমিনে টাঙ্গাইল নতুন বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ঢাকাগামী যাত্রী মজিদ মিয়া, আ. রশিদ, শামছুল, মালেকা বেগমসহ অনেকেই জানান, তারা সকালে বাস টার্মিনালে এসে জানতে পারেন যে, ঢাকায় গাড়ি যাবেনা। আকস্মিক বাস বন্ধ থাকায় প্রয়োজন স্বত্তেও তাদের ঢাকা যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যদিও ঢাকা যাবে বলে কয়েকটি বাসের শ্রমিকরা সকালে যাত্রী ডেকেছে, কিন্তু ভাড়া দাবি করছে দুইগুণ। ঢাকাগামী যাত্রী রোজিনা বলেন, হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় তিনি ঢাকা যাওয়া বাদ দিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

বাস চালক লিয়াকত জানান, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭ করা হয়েছে। কিন্তু সে আইনের অধিকাংশই চালকদের বিরুদ্ধে। নিজের জীবনের মায়া কার না আছে আর কোন চালকই ইচ্ছে করে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটান না। কিন্তু দেশের আইনই যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে এ অবস্থায় কিভাবে গাড়ি চালাবেন তারা। তাই তিনিসহ প্রতিটি চালকই গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছে।

টাঙ্গাইল জেলা বাস-কোচ-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মীর লুৎফর রহমান লালজু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটি পরিবহন ধর্মঘট নয়, আর এর সাথে শ্রমিক ইউনিয়নের কোন সমর্থন নেই। পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা গাড়ি চালানোর বন্ধ করে নিজেরাই এ ধর্মঘট করছে।

আইনের কয়েকটি ধারায় অস্পষ্টা রয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, যারা দীর্ঘ দিন যাবৎ এ সেক্টরে কর্মরত আছে তাদের অনেকেই পড়ালেখা জানে না। নতুন আইন অনুযায়ী অস্টম শ্রেণি পাস না হলে তাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে না। লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টি সহ বেশ কয়েকটি ধারা নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি হওয়ায় তারা যানবাহন চালানো বন্ধ করে দিয়েছে।

আগামী ৬ এপ্রিল এ বিষয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন ও ফেডারেশনের সভা রয়েছে। এ আইনের কয়েকটি ধারা পুর্নবিবেচনা করে সংশোধনের দাবি জানান তিনি। তবে কবে ও কখন গাড়ি চলবে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেন নি।

(আরকেপি/এএস/মার্চ ৩০, ২০১৭)