শরীয়তপুর প্রতিনিধি : মাজারে যাওয়ার সময় চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে একটি যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় শরীয়তপুরের ডামুড্যার দুই পরিবারের ছয় জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুই জনের লাশ তাদের গ্রামের বাগিতে দাফন করা হলেও বাকিদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একই এলাকার আরো দুই জন নিখোঁজ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ঢাকার রামপুরা থেকে ৯৩ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার চাঁদপুরের মতলব থানার বেলতলি সোলায়মান শাহ ওরফে ন্যাংটা পীরের মেলায় রওয়ানা দেয়। ট্রলারটি নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় মেঘনা নদীতে বৈরী আবহাওয়ার কারনে দুইটি বালু ভর্তি জাহাজের চাপে পরে ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই সাঁতার কেটে তীরে উঠে এবং নদীতে থাকা অন্যান্য নৌযানের লোকজনের মাধ্যমে জীবিত উদ্ধার হয়।

নিখোঁজদের মধ্যে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের ছয়হিস্যা গ্রামের মৃত শহর আলী মালের স্ত্রী জয়গুন নেছা বেগম (৭০), মেয়ে রানু বেগম (৩৫), শানু বেগম (৩০), একই এলাকার চরমালগাঁও হাওলাদার কান্দি গ্রামের আবেদালী হাওলাদারের ছেলে আব্দুস সাত্তার হাওলাদার (৪০), তার স্ত্রী শিল্পি বেগম (৩৫) ও মেয়ে লামিয়ার (৯) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে সাত্তার ও লামিয়ার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের গ্রামের পারিবারিক কবর স্থানে শুক্রবার বিকেলে দাফন করা হয়েছে। বাকীদের লাশ স্বজনরা ঢাকায় নিয়ে গেছে বলে জানাগেছে। এ ঘটনায় এখনো মৃত শহর আলী মালের অপর মেয়ে ভানু বেগম ও একই এলাকার বালা কান্দি গ্রামের বাবুল সরদার নিখোঁজ রয়েছে।

নিহত আব্দুস সাত্তারের ভাই আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার বলেন, আমার ভাই ২০ বছর যাবৎ ঢাকায় থাকে। পশ্চিম রামপুরার মক্কি মসজিদ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকত। সেখানে একটি ছোট মুদি দোকান চালাত। মানত থাকায় ভাই-ভাবি তাদের ছোট মেয়েকে নিয়ে ওরসে যাচ্ছিল। এভাবে তাদের মৃত্যু হবে আমরা ভাবতেও পারিনি।

ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক পিন্টু বলেন, নারায়নগঞ্জে মেঘনা নদীতে ট্রলার ডুবিতে আমার এলাকার দুইটি পরিবারের ছয় জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এদের মধ্যে ছাত্তার হাওলাদার ও তার মেয়ে লামিয়ার লাশ দাফন করা হয়েছে। বাকি নিহতদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমার জানা মতে আরো দুইজন নিখোঁজ রয়েছে।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, মর্মান্তিক নৌ দুর্ঘটনার খবর আমি মিয়িার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। ওই দুর্ঘটনায় শরীয়তপুর ডামুড্যা উপজেলার একই গ্রামের গ্রামের কয়েকজন নিহত ও নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েছি। মেঘনা নদীতে ট্রলার ডুবিতে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবার থেকে সহায়তা চাওয়া হলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।

(কেএনআই/এএস/মার্চ ৩১, ২০১৭)