শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের নড়িয়ায় দ্বিতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার জপসা গ্রামের দুই কিশোরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। ধর্ষণের শিকার শিশুটির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছে চিকিৎসকরা। রবিবার সকালে নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে পুলিশ এক ধর্ষণকারি  ও অপর এক ধর্ষণকারির মাকে আটক করেছে।

ধর্ষণের শিকার শিশুটি জপসা গ্রামের মেয়ে এবং স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী। পাশবিক নির্যাতনের শিশুটি ও ধর্ষণকারিরা প্রতিবেশী ও আত্মীয় বলে জানিয়েছেন এলকাবাসী। পরিবারের সদস্যরা শিশুটিকে নির্যাতনকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

ধর্ষণের শিকার শিশুটির স্বজনরা জানায়, শনিবার বিকেলে স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে সহপাঠিদের সাথে খেলা করছিল শিশুটি। এসময় একই গ্রামের নূরুজ্জামান হাওলাদারের ছেলে রাকিব (১৪) এবং সদর উপজেলা আটপাড়া গ্রামের খোকন মাদবরের ছেলে কবির (১৩) শিশুটিকে খেলার ছলে ফুঁসলিয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় শিশুটির চিৎকার শুনে মারাত্মক আহত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে সহপাঠীরা। পরিবারের সদস্যরা নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পেরে তাকে দ্রুত শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা। অনবরত রক্তক্ষরণে শিশুটির স্বাস্থের অবনতি হতে থাকলে শনিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে মুমূর্ষ অবস্থায় শিশুটির চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আম্বিয়া আলম কনা বলেন, ধর্ষণের কারণে শিশুটির শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় আশংকাজনক অবস্থায় শনিবার রাতেই শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকরাম আলী মিয়া বলেন, শনিবার বিকেলে জপসা ইউনিয়নের হাওলাদারকান্দি গ্রামে একটি শিশুকে ধর্ষণ করা হয়। শিশুটির মা বাদি হয়ে নড়িয়া থানায় দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের একজন ওই বাড়িরই লোক এবং অপর জনও তাদের আত্মীয়। অভিযুক্ত কবির হোসেনকে আটক করা হয়েছে। অপর অভিযুক্ত রাকিবের মা লাকি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। রাকিবকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা ইয়াসমিন বলেন, রবিবার সকালে আমি নির্যাতিত শিশুটির বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি। তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা এখনো আশংকাজনক। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ‘তে নিবীর পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসক মহাদয়ের নির্দেশে শিশুটির পরিবারকে আমরা সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করবো।

(কেএনআই/এএস/এপ্রিল ০২, ২০১৭)