রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর (এলজিইডি) স্থানীয় সড়ক ও ব্রীজ  নির্মানে অনিয়ম চরমে পৌঁছালেও সেদিকে নজর দেয় না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে উপজেলার সাংবাদিকরা এ অনিয়মের চিত্র তুলে ধরতে নির্মানাধীন কাজগুলোতে সরজমিনে গেলে ঠিকাদারের লোকজন বলেন আপনারা (সাংবাদিকরা) অযথা আসে ছবি-টবি তুলে ঝামেলা বাজান। কাজের কাজতো কিছুই হয় না। আপনারা সংবাদ করে খামাকা খালি আমাদের মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ারদের পকেট ভারী করেন। আপনারা সংবাদ করলে তো অনিয়মটা আর সংশোধন হয় না। তার চেয়ে আপনি এ সংবাদ করলে আমরা যে পাচ হাজার টাকা দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারকে ম্যানেজ করবো তার থেকে দুই হাজার টাকা আপনি নিয়ে যান এগুলো সংবাদ করার দরকার নেই।

এ কথাগুলো বলছিলেন ভরনিয়া হাট থেকে পশ্চিম বনগাঁও সড়কের মাঝে ২ কোটি ১৭ লক্ষ ৫হাজার ৩৫৯ টাকা বরাদ্দে ৬০ মিটার দুরত্বের, আর সিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মানধীন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জামান ট্রের্ডাসের কতিপয় ব্যক্তি। তবে তার নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করলেও তিনি কোনভাবেই প্রকাশ করেন নি। এই ব্রীজ নির্মানে চরম অনিয়ম করা হচ্ছে,এখানে মাটি থেকে ১ম সিসি ঢালাইয়ে অনিয়ম করা হয়েছে।

এছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে নির্ম্মমানের ইটের খোয়া ও সিমেন্ট। এখানে ব্যবহার করা হচ্ছে দুটি কোম্পানির কম মূল্যের সিমেন্ট। এই সিমেন্টের নিয়ম অনুযায়ী ল্যাব টেস্ট আছে কিনা জানতে চাইলেও ঠিকাদারের কোন লোকই এ বিষয়ে মুখ খুলেননি এমন কি তাদের কার কি দায়িত্ব নিয়ে এখানে কাজ করছে সে পরিচয়টাও এ প্রতিবেদকের কাছে কোনভাবেই প্রকাশ করে নি। অবস্থা এমন দেখে বুঝা যায় অনিয়মের পাহাড় চলছে এ ব্রীজ নির্মানে।

অন্যদিকে সম্প্রতি উপজেলার খুটিয়াট্রলি গ্রাম থেকে বনগাঁও গ্রামের দিকে ১ কিঃমিঃ সড়কেও চরম অনিয়মের মধ্যে দিয়ে নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক নির্মানের দিন রীতিমত ঐ সড়কে দায়িত্বরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিজে থেকে কাজ বুঝে নেওয়ার কথা থাকলেও ছিলেন না উপ-প্রকৌশলী। সে সড়কে গিয়ে দেখা যায়, কাজ বুঝে নিচ্ছেন প্রকৌশলীর ওর্যাক সহকারী। তাকে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-প্রকৌশলী কথায় প্রশ্ন করলে তিনি বলেন স্যার দিনাজপুরে আছেন, কাজ কে বুঝে নিবে প্রশ্নে বলেন, কেন আমিতো আছি। এ রাস্তায় হয়েছে অনিয়মের পাহাড়,এ সড়কের দু-ধারের রেলিংয়ের ইটে করা হয়েছে অনিয়ম।

এছাড়াও সম্প্রতি সন্ধারই আলীর ভাটা হতে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ সেলিনা জাহান লিটার গ্রামের বাড়ীর নির্মান করা সড়কে বালু বদলে মাটি ব্যবহারের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশে হলে। দায়সারা ভাবে ব্যবস্থা নিয়ে মাটির উপরে সামান্য বালু প্রলেপ দিয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অর্থনেতিক লেনদেনের মধ্যে কাজ চালিয়ে নিয়েছেন। এভাবে অনিয়মের মধ্যে সড়কগুলো নির্মান করে বছর না পেরুতেই শুর হয় সড়কের ভাঙ্গন,উঠে যায় সড়কের বিটুপিন। তখন পথচারীরা চলাচলে পড়ে চরম ভোগান্তিতে। ঠিক এভাবেই হচ্ছে রানীশংকৈল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাজ।

এ প্রসঙ্গে শনিবার দুপুর ১টায় উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

(কেএএস/এসপি/এপ্রিল ০৮, ২০১৭)