ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : শিল্পখাতের দ্রুত বিকাশ ও অনগ্রসর ঠাকুরগাঁও জেলার উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষিভিত্তিক ইপিজেড নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে সদর উপজেলার রহিমানপুর এলাকায় ২শ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করেছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। এর ফলে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলার সুধিমহল।

ঠাকুরগাঁওয়ে ইপিজেড নির্মাণ হলে পাল্টে যাবে অর্থনীতির চাকা। একইসঙ্গে এই ইপিজেডে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। জেলায় ইপিজেড পরিকল্পনায় শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনারও সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে মোট জনসংখ্যা ১৩ লাখ ৮০ হাজার। ১,৭৮১.৭৪ বর্গ কিলোমিটারের এ জেলায় ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ১টি সুগার মিল, মাঝারি শিল্প-প্রতিষ্ঠান ১৪টি, (কোল্ড স্টোরেজ- ১০টি), হালকা শিল্প-প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৬৩৮টি, কুটির শিল্প- ৯ হাজার ১৬৫টি ও ১টি বিসিক শিল্প নগরী রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে ৮০ ভাগ মানুষ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণ ধান, গম, ভুট্টা, আলু, আম, আখ, কাঁঠাল, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়। কিন্তু ফসল ফড়িয়াদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায়। আবার অনেক সময় প্রাকৃতিক কারণে সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে উৎপাদিত পণ্যের নায্যমূল্য পায় না কৃষক।কৃষিভিত্তিক ইপিজেড নির্মিত হলে কৃষক এখানে উৎপাদিত ফসল সহজেই বিক্রি করে নায্যমূল্য পাবে।

রহিমানপুর এলাকার কৃষক মইনুল ইসলাম জানান, সরকার ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষিভিত্তিক ইপিজেড নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে বলে আমরা খুবই খুশি। আমাদের জেলায় উৎপাদিত পণ্য দিয়েই এই ইপিজেড চলবে। উন্নয়নে এগিয়ে যাবে আমাদের ঠাকুরগাঁও।

সমাজ সেবক মঈন উদ্দিন জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এই জেলা অবহেলিত।এ অঞ্চলে গড়ে ওঠেনি কোনো শিল্প কারখানা। শুধু দিন দিন বেকারত্বের সংখ্যাই বাড়ছে এ জেলায়। এই ইপিজেড নির্মাণ হলে একদিকে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে ঘুরবে অর্থনীতির চাকা।

ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি হাবিবুল ইসলাম বাবলু জানান, ইপিজেড নির্মাণ হলে ঠাকুরগাঁওয়ের অর্থনীতি আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। সেই সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ট্রেন, বিমানবন্দর চালু হলে উদ্যোক্তারা এ জেলায় শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে আরও আগ্রহী হয়ে উঠবে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল জানান, ইপিজেড নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেয়েছি। সেই অনুযায়ী ইপিজেড নির্মাণের স্থান ও জমি অধিকগ্রহণের জন্য প্রশাসন কাজ করছে।

ঠাকুরগাঁও-১ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন জানান, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ঠাকুরগাঁওয়ে ইপিজেড নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু কতিপয় মানুষের বিরোধীতায় তখন নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।বর্তমান
সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ঠাকুরগাঁওয়ে ইপিজেড নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছে। ইপিজেড নির্মাণ হলে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। আশা রাখি জমি অধিকরণের কাজ শেষ হলে আগামী বছরে ইপিজেড নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

(এফআইআর/এসপি/এপ্রিল ০৮, ২০১৭)