স্বাস্থ্য ডেস্ক : গরমে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ধরণের ফলের শরবত পাওয়া যায়। আবার কিছু কিছু বিক্রেতা ফল কেটে কেটে ১০টাকা প্লেটে বিক্রয় করে থাকে। রাস্তাঘাটে দাড়িয়ে ফল খান না এরকম ব্যক্তি এই গরমে খুঁজে বের করা দুরূহ ব্যাপার। এই ফল আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করতে পারে।

আবার সালাদ খায় না এমন পরিবার খুব কমই পাওয়া যাবে। যারা শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমানোর চেষ্টায় আছেন তারা কাঁচা পেঁপে সালাদ হিসাবে খেতে পারেন অনায়াসে।

আমাদের দেশে নানারকম ফল পাওয়া যায়। তার মধ্যে পেঁপে অন্যতম। পেঁপের রয়েছে নানা গুণ। যাদের পেটে গোলমাল দেখা দেয়, তারা পেঁপে খেতে পারেন। অন্যান্য ফলের তুলনায় পেঁপেতে ক্যারোটিন অনেক বেশি থাকে। কিন্তু ক্যালরির পরিমাণ বেশ কম থাকায় যারা মেদ সমস্যায় ভুগছেন তারা পেঁপে খেতে পারেন অনায়াসে। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি আছে।

সালাদে যদি কাচা পেপে মেশানো হয় তাহলে এটা আরও উপকারী। কারণ পেঁপেতে থাকে প্রচুর পরিমাণ পেপসিন। এই পেপসিন হজমে সাহায্য করে। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য থাকে। অজীর্ণ, কৃমি সংক্রমণ, আলসার, ত্বকে ঘা, কিডনি ও ক্যান্সার নিরাময়ে কাজ করে। পাকা পেঁপে ফল ও কাঁচা পেপে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। পেঁপে কাঁচা কী পাকা, দুটোতেই এর উপকারের মাত্রা সীমাহীন।

কাঁচা পেঁপের কষ বাতাসার সঙ্গে খেলে লিভার সংক্রান্ত নানা সমস্যা দূর হয়। এর সঙ্গে খিদে বাড়ে। জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে। অপরদিকে পেঁপের রসে এমন কিছু উপাদান আছে যা আমাশয়, অশ্ব, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সক্ষম। -পেঁপে খেলে শরীর থেকে দূষিত বায়ু সহজেই বেরিয়ে যায়। কাঁচা পেঁপের তরকারি পথ্যের কাজ করে।

পেঁপের ঔষধি গুন সমূহ:

রক্ত আমাশয়:

প্রত্যেহ সকালে কাঁচা পেঁপের আঠা ৫/৭ ফোঁটা ৫/৬ টি বাতাসার সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। ২/৩ দিন খাওয়ার পর রক্তপড়া কমতে থাকবে।

ক্রিমি:

যে কোনো প্রকারের ক্রিমি হলে, পেঁপের আঠা ১৫ ফোঁটা ও মধু ১চা চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এরপর আধা ঘন্টা পরে উষ্ণ পানি আধ কাপ খেয়ে তারপরে ১ চামচ বাখারি (শসা-ক্ষীরার মতো এর স্বাদ) চুনের পানি খেতে হয়। এভাবে ২ দিন খেলে ক্রিমির উপদ্রব কমে যাবে।

ক্ষুধা ও হজম শক্তিতে:

প্রত্যেকদিন সকালে ২/৩ ফোঁটা পেঁপের আঠা পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা ক্ষুধাও বেড়ে যাবে এবং হজমও ঠিকভাবে হবে।

পেট ফাঁপায়:

কয়েক টুকরো পাকা পেঁপের শাঁষ, আর সামান্য লবন এবং একটু গোলমরিচের গুড়ো একসংগে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা পেট ফাঁপার উপশম হয়।

প্রবল জ্বরে:

দেড় চামচ পেঁপে পাতার রস এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা জ্বরের বেগ, বমি, মাথার যন্ত্রনা, শরীরে দাহ কমে যাবে। জ্বর কমে গেলে আর খাওয়ার প্রয়োজন নেই।

একজিমায়:

যে একজিমা শুকনা অথবা রস গড়ায় না, সেখানে ১ দিন অথবা ২ দিন অন্তর পেঁপের আঠা লাগালে ওটার চামড়া উঠতে উঠতে পাতলা হয়ে যায়।

উকুন হলে:

১ চামচ পেঁপের আঠা, তার সঙ্গে ৭/৮ চামচ পানি মিশিয়ে ফেটিয়ে নিতে হয়। তারপর ওই পানি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর মাথা ধুয়ে ফেলতে হয়। এইভাবে একদিন অন্তর আর একদিন বা ২ দিন লাগালে উকুন মরে যায়।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১৪, ২০১৭)