স্টাফ রিপোর্টার : পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট চক্র। ধর্মীয় ইস্যুকে সামনে এনে নানা অজু হাতে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে তারা।

রমজানে কোনরুপ নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না সরকারের এমন ঘোষণা সত্বেও নিত্য পণ্যের বাজার দাম বৃদ্ধির ঘোড়া দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। যাতে শঙ্কিত হয়ে উঠেছে নগরবাসী।

রমজান আসতে এখনো এক সপ্তাহেরও বেশি বাকি থাকলেও ছোলা-চিনির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বাড়তি চাল, ভোজ্য তেল, ডাল, মসলা, পেয়াজ, রসুন, আদাসহ কয়েকটি নিত্যপন্যের বাজার। দাম নিয়ন্ত্রণে খোলা বাজারে টিসিবি পণ্য বিক্রি অব্যাহত থাকলেও রাজধানীর স্থানীয় বাজারগুলোতে এ কোন প্রভাব পড়ছে না। বরং যতই রমজান ঘনিয়ে আসছে পণ্যের দাম ধীরে ধীরে বাড়ছে।

শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজান ইস্যুতে ছোলা, চিনি বেসনসহ দাম বাড়তে শুরু করেছে। রমজানের চাহিদা মাথায় রেখে সরবরাহ কমে অজুহাতে কেজি প্রতি ১০ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে। চিনিতে কেজিপ্রতি নেয়া হচ্ছে ৪ থেকে ৫ টাকা বেশি।

ব্যাংক কর্মকতা নাসির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী রমজানে দাম বাড়বে না বলেও ঘোষণা দিলেও রমজানের আগেই দাম বাড়ানো হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পন্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। পণ্যে গুদাম জাত করে অর্থ হাতানোর চেষ্টা চলছে। সরকারের চরম গাফিলতি।

বেড়েছে ভোজ্য তেলের দাম। বর্তমানে বাজারে ভোজ্যতেলসহ যেসব পণ্যে বিক্রি হচ্ছে সেগুলো আমদানি হয়েছে অন্তত ৪ থেকে ৬ মাস আগে। সে সুবাধে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১১৫ থেকে ১১৭ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪২ টাকা পর্যন্ত। বোতলজাত পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৫৯০ থেকে ৬০০ টাকায়।

এছাড়া প্রায় পণ্যেই কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। কেজি প্রতি পিঁয়াজ (আমদানী) ৩২ টাকা, দেশি পিয়াজ ৩৬ টাকা, দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা, চায়না রসুন (একদানা) ৮০ টাকা, দেশি আদা ১৭০ টাকা কেজি, শুকনা মরিচ ১৫০ টাকা, হলুদ ১২০ টাকা, হলুদের গুঁড়া ১৬০ টাকা, মরিচের গুঁড়া ২২০ টাকা, ধনিয়া ৭০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৯০ টাকা, ভারতীয় মশুর ডাল ৮০ টাকা, খেসারি ডাল ৪৫ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, ছোলা ৭০ বিক্রি, জিরা (ইরানী) ৪শ’ থেকে ৪৫০ টাকা, এলাচি ১৪০০ থেকে ১৫০০, দারুচিনি ৪০০ থেকে ৫০০, লবঙ্গ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খেজুর ৯০ থেকে ১০০ টাকা, গুড় খেুজর) ৫৫ থেকে ৫৫ টাকা, গুড় (আখ) ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস কেজি প্রতি ৩০০ টাকা, খাসির মাংস ৪৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৬৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৬৫ টাকা, দেশি মুরগি ২৫০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতিহালি মুরগির ডিম (ফার্ম) ৩০ টাকা, দেশি হাঁসের ডিম ৪০ টাকা, মুরগি ৩২ টাকা। পাকিস্তানি মুরগির ডিম ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৪৮, নাজির শাইল ৫৪, পারি চাল ৪০ টাকা, বিআর ঊনত্রিশ ৪২ টাকা, আটাশ ৪১ টাকা, শর্ণা ৩৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারে জোড়া ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা, জাটকা ২৮০ টাকা, চিংড়ি ৬ শ’ থেকে ৭ শ’ টাকা, কেজিপ্রতি রুই ৩০০ টাকা, কাতলা ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ টাকা, কৈ (চাষের) ২৪০ টাকা, সিলভার ১৩০ টাকা, পাঙ্গাস ১১০ টাকা, টেংরা ৩৬০ টাকা, শোল মাছ ৩৭০, কাচকি মাছ ৩০০ টাকা, শিং (দেশি) ৬৫০ টাকা।

কেজি প্রতি আলু ৩২ টাকা, শষা ৩৬ টাকা, পটল ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢেড়স ৩৬ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পেঁপে ২৪ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, বরবতি ৪০ টাকা, কাঁকরল ৪০ টাকা, ক্বাচ কলা ৪০ টাকা, লাউ ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (ফালি) ২০ থেকে ২৪ টাকায় , লেবু (হালি) ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে লালশাক, ডাটা, পুঁইশাকের আঁটি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।

(ওএস/এটিআর/জুন ২০, ২০১৪)