সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় একের পর এক হাওর ডুবে ফসলের ক্ষতির রেশ কাটতে না কাটতেই মাছে শনি ভর করেছে। এই শনির দশা শুধু তাহিরপুর উপজেলায় নয় সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলায় ভর করেছে। এখন মাছ মরতে শুরু করেছে।

বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর তা পচেঁ বিশাক্ত গ্যাস সৃষ্টির কারনে মৎস্য সম্পদে ভরপুর এ জেলায় মৎস্য সম্পদ এখন হুমকির মুখে। বাতাশে দুগন্ধ নষ্ট করছে পরিবেশ। উপজেলার নদ-নদী ও তলিয়ে যাওয়া কয়েক সাপ্তাহের ব্যবধানে হাওরের কাঁচা ধান পানিতে পঁচে দূর্গন্ধ ও পানি বিষাক্ত হয়ে মিঠা পানির মাছ ভেসে উঠছে।

এর ফলে হাওর পাড়ের হাজার হাজার মৎস ও কৃষক পরিবার গুলোর উপর বিরুপ প্রভাব পরছে। এসব দেখে হাওর পাড়ের সচেতন মানুষের মনে উৎবেগ আর উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। এই বিষাক্ত মাছ খেয়ে অনেকেই অসুস্থ হচ্ছে। হাওরের চারপাশে এখন পচাঁ দূগন্ধ আর মাছ মরে পচেঁ যাওয়ার দূগন্ধ সর্বতই বিরাজ করায় পরিবেশ বিপর্যয় ঘঠাচ্ছে।

বোরো ফসল হারিয়ে কৃষকরা হাওরে মাছ ধরেই এবার বাচাঁর স্বপ্ন দেখছিল তখনেই শুরু হল মাছের মরন। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ। কৃষকের সব স্বপ-আশা এবার যেন শেষ করতেই এমন দুর্যোগ শুরু হয়েছে হাওর পাড়ে। জানাযায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওর সহ কয়েকটি হাওরে মাছ মরে ভেঁসে উঠছে। মাছ গুলো হল,পুটি,টেংরা,ঘনিয়া,বোয়াল মাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ।

গত কয়েক সাপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলার ২৩টি ছোট বড় হাওরের মধ্যে ২০টি হাওর ডুবে গেছে। এসব হাওরে এখন পানিতে থৈ থৈ করছে। ডুবে যাওয়া বোরো ধানের জমিতে থাকা কাচাঁ ধান পচেঁ পানি দূষিত হয়েছে। এর ফলে পানিতে অস্বাভাবিক হারে হাইড্রোজেন সালফাইট ও এমোনিয়া গ্যাস তৈরী হওয়ায় কারনে পানির অক্সিজেনের মাত্র কমে গেছে।

মাছের স্বাভাবিক জীবন ধারনের জন্য পানিতে যেখানে ৫-৭ পিপিএম অক্সিজেন থাকার কথা সেখানে হাওরের দূষিত পানিতে ২-৪ পিপিএম অক্সিজেনের অভাবে মাছ ভেসে ওঠেছে। সুনামগঞ্জের মাছ,ধান সারাদেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানী হয়। কিন্তু এবার মাছও গেল ধানও গেল।

অন্যান্য বছর হাওর তলিয়ে গেলেও মাছ বিক্রি করে সংসার চালানো যেত,এবার সেই আশাও নিরাশায় পরিনত হয়েছে। সরজমিনে বিভিন্ন হাওরে গিয়ে দেখা যায়, বিষাক্ত পানি খেয়ে

পানির পচা দূর্গন্ধ বাতাসে ভেসে এসে পরিবেশ নষ্ট হয়ে উঠছে। হাওর পাড়ের কৃষক ও মৎস পরিবারের সদস্যরা জানান,এই বার ত সব শেষ হাওর গেল,গরু গেল অহন মাছ। এইবার আর বাঁচার উপায় থাকত না। না খাইয়া মরতে হইব। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনরে পক্ষ থেকে মাইকে সতর্ক বার্তায় সাধারণ জনগনকে মাছ না খাওয়ার জন্য পরামশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জরুরী ভিত্তিত্বে পানি বিশুদ্ধ করে মৎস উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য আহ্বান জানান হাওর পাড়ের সর্ব স্থরের জনগণ। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান,বোরো ফসল ডুবে যাওয়ার পর এখন হাওরে পচাঁ দূগন্ধ আর হাওরের মাছে ভেসেঁ উঠছে। গুরুত্ব সহকারে দ্রুত প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।


(জেএভি/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০১৭)