মাদারীপুর প্রতিনিধি : গত কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে মাদারীপুর জেলায় বোরো-ইরি ধান, পাট ও রবিশস্য পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো বেশীরভাগ ধান পাট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। দেরীতে আবাদ হওয়া রবি শস্যেরও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আর বৃষ্টি না হলে পানি সরে যাবে এবং বোরো ধানের কোন ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না বলে কৃষি কর্মকর্তাদের দাবি।

কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ৩৪ হাজার ৮‘শ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দূর্যোগ কবলিত জমির পরিমাণ ছিল ৭৫ হেক্টর।

৩৪ হাজার ৮৯২ হেক্টর পাট চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দূর্যোগ কবলিত ১ হাজার ৬৭৫ হেক্টর।

কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ার পরও কৃষি অফিস বলছে এই পানিতে তেমন কোন ক্ষতি হবে না। অথচ তাদের প্রতিবেদনে রয়েছে সম্পুর্ণ নিমজ্জিত জমি ৪৫০ হেক্টর আর আংশিক নিমজ্জিত জমি ১ হাজার ২২৫ হেক্টর।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার ব্রাহ্মন্দী, পেয়ারপুর, আমবাড়ি, বড়বাড্ডা, বালিয়া খালপাড়, শিবচর উপজেলার চরজানাজাত, কাঠালবাড়ী, মাদবরেরচর, বন্দরখোলা, রাজৈর উপজেলাসহ কালকিনি উপজেলার সমিতির হাট, কাশিমপুর ও আলীনগরসহ বেশ কয়েকটি নিম্নঅঞ্চলে ভারি বর্ষণের কারণে জমির পাকা ধান, পাট ও মেছতা ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ওই সকল এলাকার ফসলী জমির বেশির ভাগ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ফলে স্থানীয় কৃষকেরা পড়েছে চরম বিপাকে। বেশীর ভাগ কৃষক বছরে একবার চাষ করে পরিবারের সকল খরচ বহণ করে। এ সব এলাকার নিম্ন অঞ্চলের জমিতে একবারের বেশী ফসল করা যায় না। তলিয়ে যাওয়া জমির অধিকাংশ এক ফসলী।

কৃষক জলিল, আলেপ, রহমত আলী, সিকিন আলী, ছাত্তার হাওলাদার, সোবাহান বেপারী, কামরুল হোসেন বলেন, ‘আমাগো ফসলের জমিতে যে পরিমাণ বৃষ্টির পানিতে ক্ষতি হয়েছে তা আমরা কি দিয়া পুষিয়ে নেব? এখনও অনেক পাকা, আধাপাকা ধান পানির নিচে। পাট সে তো এখনো তেমন বড় হয় নাই। তারপরও পানি নিচে রয়েছে বেশীর ভাগ পাট। পানি স্থায়ী হলে এ সব পঁচে যাবে।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টিতে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তবে যেখানে পানি জমে রয়েছে সেখান থেকে পানি সরানোর জন্য ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মেম্বারদের পরামর্শ দিয়েছি। যত তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা করা যায় এবং কোন কৃষককের ধানের যেন ক্ষতি না হয়। আমরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। সামনে কয়েকদিন বৃষ্টি না হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।”

(এএসএ/এএস/এপ্রিল ২৮, ২০১৭)